পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

sts ক্ষণকাল তাহার প্রতীক্ষা করিয়া সে নিজের ঘরে ফিরিয়া গেল। তাহার মনে পড়িল নন্দ ও একদিন নির্জলা একাদশীর কথাটা তুলিয়াছিল। কিন্তু অক্ষয়ের মত এমন ভদ্র ও সংযতভাবে নয়। সে নির্জলা একাদশী করে শুনিবা মাত্র একটুকরা কাগজ টানিয়া নিয়া মোটা মোটা হরফে লিখিয়াছিল ‘নির্জলা', তারপর কাগজটা সামনে ধরিয়া হাসিয়া বলিয়াছিল 'হঠাৎ দেখলে কথাটাকে “নিলাজ’ মনে হয় না ? হয়, কি বল ? বলই না ছাই হয় কি না হয়, তাতে আর তোমার এমন কিছু মহাপাপ হবে না ?” ד বিছানায় শুইয়া সুমতির মনে হইল অক্ষয়ের ভদ্রতার চেয়ে নন্দর সেই অসংযত হাসিতে যেন কুটিলতা কম ছিল। নন্দর বিশ্ৰী মন্তব্যটার মধ্যেই যেন সহানুভূতি ছিল বেশী । বিকালের দিকে বৃষ্টি কমিয়া গেল। অনেক ভাবিয়া সুমতি নন্দর খবর নিতে গেল। বলিল ‘উপোস করছেন কেন ?” নন্দ সবগুলি জানালা বন্ধ কবিয়াছে, ঘরেব ভিতরটা ভোরবেলার মতই আবছা । “আমার জর হয়েছে ।” “বেশী জর ? ‘কপালে হাত দিলেই টের পাবে জর বেশী কি কম।” কপালে হাত দিতে সুমতির সাহস হইল না। খানিক চুপ করিয়া থাকিয়া বলিল 'একটু দুধ খান।” নন্দ ধড়মড় করিয়া বিছানায় উঠিয়া বসিল । ‘সমস্ত বাড়ীতে পচা ঘিয়ের গন্ধ, লুচি ভাজিছিলে ?” ' ' “নিয়ে এসো খানকত লুচি, লুচিই খাব।” ‘জরের মধ্যে লুচি খাওয়া কি ঠিক হবে ? নন্দ হাসিল । ‘কপালে হাত দিয়ে যে জ্বর দেখতে পারে না তার সে ভাবনা কেন ?” ইহার জবাব অবশ্য সুমতি দিতে পারিল না, কিন্তু লুচিও সে নন্দকে খাইতে দিল না। এক বাটি গরম দুধ আনিয়া কড়া সুরে বলিল “খান, ছেলেমানুষী, ८s 5 ।।' (WV)