পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জন্মের ইতিহাস কোথা হইতে ? কিন্তু যে কারণেই ভয় পাইয়া থাক পাচুর ভয় ভাঙ্গানো দরকার। “তুই ছায়া দেখেছিস পাঁচু। চল দেখবি, ছাদে কিছু নেই।” পাচু সভয়ে বলিল ‘না মামা , কিন্তু বিকাশ তাহা শুনিল না, পাচুকে শক্ত করিয়া বুকে চাপিয়া ধরিয়া ছাদের দিকে চলিতে চলিতে হাসিয়া বলিল, “আমার সঙ্গে যাচ্ছিাস, তোর ভয় কিরে ? ভূতের আমি কাণ মলে দেব।' ছাদে গিয়া দেখা গেল শাকচুমীর কথাটা নেহাৎ মিথ্যা নয়। চুল এলাইয়া দিয়া মৃন্ময়ী অসম্বত বেশে ছাদের আলিসার সঙ্গে মিশিয়া বসিয়া আছে। পায়ের শব্দেও সে মুখ তুলিল না। “তুই যে এখানে মিনু ? মৃন্ময়ী কলহের সুরে বলিল ‘কেন। এখানে কি আমার থাকতে নেই নাকি ?” বিকাশ বলিল “মিথ্যে চটস্ কেন ? পাচু বড় ভয় পেয়েছে। মাথা ধরা কমাতে তুই ছাতে বেড়াচ্ছিলি, ও মনে করলে আমাদের বাড়ীতে আজ একটা শাকচুমীই বা এলো। যে ফস কাপড় তুই পরিস।” মিনু বাঝালো সুরে বলিল ‘এবার থেকে ময়লা কাপড় পরব। ধোপার পয়সা দিতে তোমার কষ্ট হয় জানতাম না দাদা ।” বিকাশ অবাক হইয়া গেল। মৃন্ময়ীর মেজাজ সব সময় ভাল থাকে না, কিন্তু এ ভাবে কলহ করাও তাহার স্বভাব নয়। তথাপি সকৌতুকে হাসিয়াই বিকাশ বলিল ‘হয়ই ত কষ্ট । তোর জন্য একটা পয়সা খরচ করতেও আমার কষ্ট হয়। কিন্তু তোর ভূতটা কই রে?” মৃন্ময়ী চমকাইয়া উঠিল। ‘ভূত। ভূত কি ?” “পাচু দেখেছে। তুই বেড়াচ্ছিলি, একটা ভূত এসে তোকে জড়িয়ে ধরল।” মৃন্ময়ী হঠাৎ যেন ক্ষেপিয়া গেল “তুই দেখেছিস পাচু ? মিথ্যেবাদী হারামজাদা, দেখেছিস তুই।” চাদের আলোয় তাহার গালে জলের দাগ চকচক করে, চোখ যেন পাগল মেয়ের রাগ করা চোখ। মনে হয়, পাচুকে সে আঘাত করিবে। কিন্তু হঠাৎ সে शूद्र दळांशेल ‘ওটাকে ভূত মনে করেছিল বোধ হয়।” মৃন্ময়ী নিজের ছায়াটি দেখাইয়া দিল। একটি হ্রস্ব বাহু বাড়াইয়া ছায়াও তাহার কথায় সায় দিল । s