পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ऊप्धा : এবার সহজেই বুঝতে পারলাম এতক্ষণে বাড়ীর ভিতরের অঙ্গনে এসে দাড়িয়েছি, যে অঙ্গনের অর্ধেকের বেশী দখল করেছে পাশের ভিটায় ভাঙা ঘরখানা। একটু দ্বিধা করলাম। তিনখানা ঘর-বড় আর ভাল তিনখানা ঘর-ভাঙা ; দাড়িয়ে আছে শুধু টিনের চালের ছোট ঘরখানা, সামনে যার রোয়াক পৰ্যন্ত নেই। ওখানে আশ্রয় খোজ করার চেয়ে গাছতলায় নিরাশ্রয় হ’য়ে রাতটা কাটিয়ে দেওয়াই কি বুদ্ধিমানের কাজ হবে না ? যা কিছু দেখছিলাম, সমস্তই কয়েক মিনিট পরে পরে চোখের পলকে--প্ৰায় না দেখারই সামিল। তাই বুদ্ধির ওপর বেশী নির্ভর না করে এগিয়ে গিয়ে বন্ধ ঝাপের দরজা ঠেলে গলা ফাটিয়ে ডাকলাম, কে আছেন ? ও মশায় ! শুনছেন ?” ভয়াত পুরুষ কণ্ঠে সাড়া এল ; কে ?” 曾 প্ৰথমে বললাম, “আমি।” তারপর সংক্ষেপে বুঝিয়ে বললাম যে পথ হারানো একজন পথিক-ভদ্রলোক । বাপে কান লাগিয়ে ভিতরের শব্দ শুনবার চেষ্টা করছিলাম, চাপা মেয়েলি গলার প্রশ্ন শুনতে পেলাম ; ‘খুল,বে ? যদি চোর ডাকাত হয় ?” চাপা পুরুষ গলার জবাব শুনলাম ; “চোর ডাকাত হ’লে কি ঝাপটা খুলতে পারবে না ?” একটু পরে ঝাপ খুলে গেল, সন্তপণে ভিতরের অন্ধকারে এক পা এগিয়ে দাড়িয়ে পড়লাম। ভিজা জাম-কাপড়ের জলে সমস্ত মেঝে ভাসিয়ে দেবার ইচ্ছা ছিল না। ঘরের ভিতরে ভাপৎসা গরম আর গন্ধে কয়েক মুহূতের জন্য আমার নিশ্বাস যেন বন্ধ হয়ে এল। আমার মনে পড়ে গেল, অনেক দিন আগে একবার একটা মালগুদামে কয়েক ঘণ্টা সময় নিশ্বাস নিতে আমার ঠিক এই রকম কষ্ট হইয়াছিল। আর ঠিক এইরকম অকথ্য অস্বস্তির সঙ্গে মনে হয়েছিল আমারই পেটের ভিতরের সিক্ত উষ্ণতা বাইরে এসে চারি দিক থেকে আমার সর্বাঙ্গে মাখা श्'6श् शi65छ । কালিপড়া একটা লণ্ঠন জলবার পর টের পেলাম, ঘরে অনেকগুলি নানা বয়সী। মানুষ বাস করলেও এটাকে মালগুদামও বলা চলে। তবে পৃথিবীর কোন মালগুদামেই এত রকমের বিভিন্ন আর বিচিত্ৰ মাল থাকে কি না। সন্দেহ। আর ঘরে তিল ধারণের স্থান নেই। ঘরের অৰ্দ্ধেক জুড়ে আছে সেকেলে একটা খাট আর একেলে চৌকী, খাটের ছেড়া ময়লা বিছানায় শুয়ে আছে একগাদা ছেলেমেয়ে। চৌকীতে গোটা দুই তোরঙ্গ, পিতল ও মাটির হাড়ি-কলসী, বস্ত বাধা লেপ, 心> @