পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অন্ধ ও ধাধা। তাহার স্বাস্থ্য রূপ ও প্ৰতিভার অপচয়ে রাধা এমন বিচলিত হইল কেন ? পরিচয় তো মাত্র কয়েক ঘণ্টার ! পাতলা কাপড়ের আড়ালে রাধাকে ছায়ার মত দেখা যাইতেছিল, একটুখানি বিদেহী সোনালী আভা । হেরম্ব বুঝিতে পারিল মাথায় জল দেবার চেষ্টা মাত্র না করিয়া রাধা জলচৌকীতে নিশ্চল হইয়া বসিয়া আছে। বাহিরের দিকে পা বাড়াইয়া হেরম্বও নিশ্চল হইয়া দাড়াইয়া পড়িল । বারান্দা যেখানে বাহিরের ঘরের দিকে দিকপরিবর্তন করিয়াছে সেখান হইতে একটি সুদীর্ঘ কালো ছায়া উকি মারিতেছিল, হেরম্বকে চাহিতে দেখিয়া চোখের পলকে আন্তহিত হইয়া গেল । চলিতে আরম্ভ করিয়া হেরম্বের মনে হইল, এ মন্দ নয়। সমুখে যখন স্বহস্তেরচিত বস্ত্রাবাসে স্বৰ্ণাভ ছায়া জ্বলজ্বল করে পিছনে তখন বিপুল কালো ছায়া নিঃশব্দে প্রহরীর মত দাড়াইয়া থাকে। বাহিরের ঘরে পা দিতে দৈত্য সোজা দাড়াইয়া গম্ভীর আওয়াছে বলিল, সেলাম বাবু। সেলাম। তুমি মুসলমান নাকি ? গোলাম মেছলমান । লোকটার। আপাদমস্তক একবার নিরীক্ষণ করিয়া হেরম্ব পথে নামিয়া পড়িল । ইহার লোমশ হাতের এক টিপুনিতে গলার অবস্থাটা কি রকম দাড়াইতে পারে কল্পনা করিতে গিয়া কৌতুকানুভূতির পরিবর্তে তাহার গলার মধ্যে খুষ খুল করিয়া উঠিল । দিন যায়। আর হেরম্বের মনে হয়। রাধা নিজে যেন ধাধা নয়, একটা अडूउ রহস্য তাহাকে কেন্দ্ৰ করিয়া পাক খাইতেছে। বায়ুর মতই হয়ত তাহা স্বচ্ছ, কিন্তু ধূলাবালিতে এমনি আবিল হইয়া উঠিয়াছে যে রাধাকে ঝান্সা। মনে হয়। জীবনে একটি বিশেষ অবস্থায় উপনীত হইয়াছে বলিয়াই তাহার যতটুকু অভিনবত্ব, নাহিলে রূপের হিসাব ছাড়া প্রভার সঙ্গে তাহার পার্থক্য সম্ভবতঃ এতখানি নয় । A বিকালের দিকে প্রভা, রাধার সঙ্গে দেখা করিতে গিয়াছিল, ফিরিয়া আসিয়া বলিল, তোমার বর্ণনার সঙ্গে একেবারেই মিলল না। কেমন ভয়ে ভয়ে কথা &9R *