পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q \8 sffs পড়িল। হেরম্বের বিধবা পিসীমাও আসিয়াছিলেন, রাধাকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন, হাত দিয়ে ছুয়ে থাক বাছা, একজনের ছুয়ে থাকতে হয়। কাশির শেষ ধাক্কায় রাধার কজি হইতে অধরের মুষ্টি খুলিয়া গিয়াছিল। তাহার পায়ে হাত রাখিয়া চোখ তুলিয়া পিসীমার বিধবা বেশ দেখিয়া রাধা যেন অবাক হইয়া গেল । আমি তো কিছুই জানি না, এখনি কি সিন্দুর শাখা খুলে ফেলতে হবে ? তাহার এই কথার কল্পনাতীত অর্থ হৃদয়ঙ্গম করিতে সকলের সময় লাগিল । হেরম্ব বলিল, এখন নয়, ফেরার সময়, শ্মশানে । শ্মশান কোথায় হেরম্ব বাৰু? সহরের বাইরে ? লোকালয় ছাড়িয়ে ? দু'জনের মধ্যে শুধু মৃতদেহের ব্যবধান। সামনে ঝুকিয়া সকলের অশ্রাব্য স্বরে রাধ। আবার বলিল, এবার থেকে শ্মশানে বাস করব-জীবনের শেষ সীমায়। মানুষের মধ্যে বাস করার অধিকার আমার ঘুচল। রাধার দাদা আসিয়াছিলেন, হেরম্বের দুই হাত চাপিয়া ধরিয়া কৃতজ্ঞতায় তিনি একেবারে উচ্ছসিত হইয়া উঠিলেন। কি ব’লে আপনাকে ধন্যবাদ দেব ভেবে পাইন হেরম্ববাবু দু’দিনের জন্য বাড়ী গিয়েছি, ফিরে দেখি রোগ স্বামীকে নিয়ে রাধা কোথায় যে গেছে। কেউ বলতে পারে না। আপনার তার পাওয়া পর্যন্ত কি দুর্ভাবনাতেই যে দিন যাচ্ছিল। হেরম্ব বলিল, আপনার খবর দেওয়ার মধ্যে আমার কোন কৃতিত্ব নেই। আপনার বোন তার করতে বলেছিলেন । অ ! বলিয়া দাদার কৃতজ্ঞতার উচ্ছাস জুড়াইয়া গেল। বিকালেই বিদায়ের আয়োজন। ছ্যাকৃড়া ঘোড়ার গাড়ী আসিয়া গলির মুখে দাঁড়াইল। রাধার দাদা গাড়ীতে জিনিস তুলিতে ব্যস্ত হইয়া পড়িলেন। রাধা বলিল, এ বেশে ফিরতে হ’বে জানতাম, এ ভাবে ফিরব জানা ছিল না। হেরম্ব নীরব হইয়া রহিল। রাবণের অবস্থা হ’ল আমার। দ্বিধা করে করে স্বর্গের সিড়ি আর তরী হল না। আজ থেকে দশমাস সময় এখনো মানুষ আয় দিয়েছে, भांग्रस খুব বিবেচক, নয় ? এ আলোচনা হেরম্বের আজ সহ হইতেছিল না। প্ৰসঙ্গান্তরের প্রত্যাশায় জিজ্ঞাসা করিল, দৈত্যকে দেখতে পাচ্ছি না যে ? VNON s