পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানিক গ্রন্থাবলী শ্বশুরের সুদীর্ঘ ফাক কৈফিয়ৎ পড়ে। এবারও সে চাওয়ামাত্র টাকা পাঠিয়েছে। দ্বিধা করে নি, প্রশ্ন করে নি, দেরী করে নি। এ কথাটা বোধ হয় সতীরাণীর মনে নেই। বোধ হয়। সে ভুলে গেছে যে হেরম্ব টাকা না দিলে বাপের বাড়ীর অসীম আব্দর তার কবে বিষিয়ে যেত-এখন থেকে টাকা পাঠান যদি সে বন্ধ করে দেয়, কয়েক মাসের মধ্যেই সে টের পাবে বাপ ভাই আর স্বামী এদের মধ্যে কে তার বেশী আপন । ছেলে হবার ভয় ? সাত ছেলের মারি ছেলে হবার ভয় ? সাতবার যে গৰ্ভধারণ করেছে বিনা দ্বিধায়, আট ন” মাস পূর্ণ হলে হেরম্ব বুদ্ধি বিবেচনা পূর্বক যার নিজের ও গর্ভের সন্তানের অনিষ্ট হওয়া নিবারণের জন্য বৈঠকখানায় শুয়েছে, বাইরে রাত কাটিয়েছে, বলা মাত্র যাকে বাপের বাড়ী পাঠিয়ে দিয়েছে, কোন প্রয়োজন না থাকলেও কলকাতা থেকে ট্রেইনড নাসার্স আনিয়ে যার কাছে থাকবার ব্যবস্থা করেছে। প্রসবের অনেক আগে থেকে-সে কিনা আজ তার সঙ্গে এক ঘরে এক বিছানায় শুতে অস্বীকার করছে আবার সন্তান ধারণ করবার ভয়ে । সতীরাণী যে বছর-বিয়োনী নারী, এ দোষ যেন হেরম্বের ! স্বাস্থ্য যদি তার খারাপ হত, প্রসব হতে যদি সে কষ্ট পেয়ে থাকতো, তা হলেও হেরম্ব তার আতঙ্কের মানে বুঝতে পারত। কোন কারণ থাক বা না থাক নিছক অর্থহীন আতঙ্ক হলেও হেরম্ব তা মেনে নিত। সতীরাণী এসে যদি আবদার করত তার কাছে, কেঁদে যদি তার পায়ে ধরত, কিম্বা তার মানটা শুধু বজায় রেখে যদি বলত যে কিছুকাল তারা তফাৎ থাকবে, হেরম্ব হাসিমুখে সায় দিত। প্রসব হতে ছ’মাস করে সতীরাণী যে তফাতে থাকে, কাজের চাপে হেরম্ব যে মাঝে মাঝে মাসে দু’চারদিনের বেশী এবং কখনো দু'তিন মাস বাড়ী আসতে পারে না, সতীরাণীকে ছাড়া কি চলে না। হেরম্বের ? মেয়েমানুষের कि ख्बख्ाद ख्याgछ छ?tऊ ? এই জালাটাই হেরম্ব ভুলতে পারে না যে বিয়ের দশ বছর পরে সতীরাণী তাকে এতখানি ছোটলোক ভেবেছে যে স্ত্রী ও সন্তানের জননীর সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক যে আলাদা এটুকু সে জানে না ! আজি আছে কাল নেই মেয়েমানুষের মতই সে যেন ব্যবহার করে এসেছে সতীরাণীর সঙ্গে দশ বছর ধরে !! এত কষ্ট ତଦ୍