পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

မုကျိ၊ পৌছে দেবে কোনো সভ্য ভদ্রলোকের বাড়ী কিম্বা সদরের হাসপাতালে। কিন্তু ওদেরই একজন হবার অধিকার আর সে পাবে না। পায়ে ধরে র্কাদলেও নয়। মুহম্মানের মত হেরম্ব বনের দিকে তাকায়। কি আরক্ত সূৰ্য উঠছে বনের কতিত অংশের ফাকে, না কাটলে এখনো ওই শাল গাছের আড়ালে থাকত মৃদু কুয়াসায় ক্রুদ্ধ টকটকে লাল এই সূৰ্য । জীবনে আজ প্ৰথম হেরম্ব অনুভব করে সে বড় এক, বড় অসহায়, বড় দুর্বল, বড় দুঃখী। বাকী শালবনের দিকে চেয়ে জীবনে আজ তার প্রথম কর্মোন্মাদনার বদলে জাগে গভীর অবসাদ, আলস্যের অনুরাগ। এ বন কাটতে হবে তাকে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাটতেই হবে! কেন ? কার কাছে সে কি অপরাধ করেছে যে কনট্রাক্টের পর কনট্রাক্টের মৰ্যাদা রাখতে তাকেই খাটতে হবে উৰ্দ্ধশ্বাসে, সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে, ঘোড়দৌড়ের ঘোড়ার মত ? কে সে ? কে আছে তার ? কার জন্য, কিসের জন্য এই কঠোর সংগ্রাম ? জীবনে এই প্ৰথম বলেই হয়তো বেলা বাড়ার সঙ্গে এই সহৃদয় বৈরাগ্যের ভার হেরম্বের কমে আসে, শুধু থেকে যায় একটা অনভ্যন্ত অস্থিরতা, অজানা বিষাদের ছাপ । বন কাটতে হবে বৈকি। বাপারে, এত টাকা খরচ হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে, এখন সময়মত কাজটা না করলে কি লোকসানটাই দিতে হবে তাকে ! দু'সপ্তাহ সময় বাড়াবার জন্য দরখাস্ত পাঠিয়ে হেরম্ব লোকের সন্ধানে ঝুমুরিয়ায় যায়। ঝুমুরিয়া ও তার আশেপাশে গা থেকে লোক সংগ্রহ করে সাওতালদের অভাব পুরণ করতে হবে । মুস্কিল এই যে এখন ধান কাটার সময়। গোঁয়ে নিষ্কৰ্ম মজুররা পর্যন্ত ধান কাটার কাজে লেগে গেছে। ধান পাকলে তা ঘরে তুলতে দেরী করলে চলে না। গরীব তো চাষীরা। বড় গরীব। ধান কাটতে হবে বৈকি। তা, হেরম্বের বনটাও তো কাটতে হবে তাড়াতাড়ি । বনটা কাটা হোক, তারপর সবাই মিলে সারাবছর ধরে ধান কাটুক, কোন আপত্তি নেই হেরম্বের। ܢ * আপত্তি বীরেশ্বরের। এবং যেহেতু ঝুমুরিয়ায় বীরেশ্বরের প্রতিপত্তি কম নয়, আপত্তি অনেকের, দু’চারজন ছাড়া। বীরেশ্বর মাথা নেড়ে বলে, “তা হয় না। ধান নষ্ট হয়ে যাবে। বন তো রইল, ধান কেটে সবাই যাবে’খন बन कitऊ ।' o ܠ