পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহাকালের জটার জন্ট SaS9 দিতে গিয়া তাহার মনে হইল ইহার এই অর্থহীন খেয়ালটা সত্য ভাবিয়া না নিলে আর কোনমতে চলিবে না। হিসাব করিয়া দেখিলে বেশ বুঝা যায় তার চেয়ে এই স্বামিহীন মেয়েট স্বামিভাগ্যে কম ভাগ্যবতী নয়। শূন্যকে ভালবাসিয়া ইহার নালিশ নাই, বেদনা নাই, একেবারে মশগুল হইয়া আছে। জাগিয়া থাকার সময় নিজের স্বামিপ্রেমে নিজেই মুগ্ধ হইয়া থাকে, ঘুমাইয়া স্বামীর স্বপ্ন দেখে । এ ব্যাপারটা সুলতার বড় রহস্যজনক মনে হয়। পাগলের জাগ্ৰত অবস্থাটাই স্বপ্ন, স্বপ্নের অবস্থাটা কেমন ভাবিতেও পারা যায় না। সিদুর পরিয়া সুচিত্রা সুলতাকে প্ৰণাম করিল। এক পা পিছাইয়া গিয়া সুলতা বলিল, “বেঁচে থাক ভাই, স্বামী-সোহাগিনী হও।” দেখিতে দেখিতে সুচিত্রার চোখে জল আসিয়া পড়িল । ‘সেই আশীৰ্বাদই কর বৌদি। ও ত্যাগ করবে বলে আমার আজকাল এমন ভয় করে ।” “ত্যাগ করবে। কেন ?” সুচিত্ৰা ভারী লজ্জা পাইল । এদিক-ওদিক চাহিয়া ফিসফিস করিয়া বলিল, “ছেলেমেয়ে হল না যে ? ও বলে, নাইবা হল ছেলেমেয়ে, চাকরি করে আমি তোমায় ছেলে কিনে দেব। তাতে কিন্তু ভরসা পাই না বৌদি।” সুলতার নিঃশ্বাস যেন আটকাইয়া আসিল । ‘চাকরি করে তোমায় ছেলে কিনে এনে দেবে বলেছে ? ‘বলেছে। কিন্তু তবু আমার ভয় করে। কেনা ছেলেকে কেউ ভালবাসতে পারে ? সুচিত্রা নিজের মনে মাথা চালিতে লাগিল। চোখ তুলিয়া সুলতা দেখিতে পাইল দরজার কাছে পাণ্ডুং চুপ করিয়া দাড়াইয়া আছে। সে যেন অকুলে কুল পাইল। উঠিয়া কাছে গিয়া মিনতি করিয়া বলিল, “পঞ্চ ভাই, ওকে তুমি ডেকে নিয়ে যাও । ও আমাকে পাগল করে দেবে।’ পষ্ণু রুক্ষম্বরে বলিল, “কেন ? ও ত আপনার কোন ক্ষতি করেনি ? ‘कि बलछ नई ?' “আপনার বড় হিংসা।” বলিয়া সুলতার উপর রাগ করিয়াই যেন কড়া সুরে পণ্ডু সুচিত্রাকে ডাকিল, “এখানে বসে হচ্ছে কি ? চলে এসো।” ow-fatfissi o