পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S88 চুরি চুরি খেলা ছেলেবেলা চোর-চোর খেলায় আমার ছিল বুড়ী ছুয়ে বিশ্রামের খেলা। আজও আমি তেমনি অশক্ত হয়ে আছি মাধুরী। নিজে চুরি হয়ে গেলেও ঠেকাবার ক্ষমতা আমার নেই। যে খেলা শক্তিমানের, আমার কি উচিত সে খেলায় যোগ qቫNeጃ] የ মাধুরীর সমস্ত মুখ আবার সাদা হইয়া গিয়াছিল, নতচােখে আস্ফুটম্বরে সে বলিল, জানিনে। কিন্তু দুর্বলের সঙ্গে ছাড়া যে খেলতে পারে না, সে তবে কি করবে ? সে সকলের খেলা দেখবে, একটা মোট বই টানিয়া নিয়া অনন্ত বলিল, হাল্কা মানুষ ভেসে উঠবে আকাশে । সেখান থেকে পৃথিবীর দিকে চেয়ে থাকবে। মর্ত্যের সুখদুঃখের সঙ্গে ওছাড়া তার আর সম্পর্ক কি ? আকাশ ছোয়া কথা ! অনন্তের মুখের দিকে চাহিয়া মাধুরী চুপ করিয়া দাড়াইয়া রহিল। অনন্ত মোটা বইটার উপর ঝুকিয়া পড়িল । অনেকক্ষণ পরে ভয়ে ভয়ে মাধুরী বলিল, আপনার ওষুধ আনিব ? কিছু খেয়ে সেটা খেতে হয় ? অনন্ত মুখ তুলিয়া বলিল, আনে। কিন্তু একটা কথা শুনে যাও। সুশীলকে বরখাস্ত করতে চেয়েছিলাম বলে কমলার সঙ্গে আজ আমার ঝগড়া হয়েছে। আর বাগড়া করবেন না । বলিয়া মাধুরী ওষুধ আনিতে চলিয়া গেল। ওষুধ খাইবার সময় অনন্তের মনে হইল একবার উপরে গিয়া গোপনে আশিতে দেখিয়া আসিবে তার চোখ দুটিও রক্তবর্ণ হইয়া উঠিয়াছে কিনা, কপালের একটা শিরা দপদপা করিতেছে কিনা। সেও কি আজ অসুস্থতার কবি নয় ? প্ৰথম দিন কমলা খালি পায়ে কঁকার বিছানো পথে হাটতে পারে নাই। এখন কোনই অসুবিধা হয় না। পথের দু’দিকে ফুলের চারাগুলি যেন ফুল-ফোটানোর প্রতিযোগিতা শুরু করিয়াছে। পটপট করিয়া কয়েকটা রক্তগোলাপ ছিড়িয়া কমলা খোকার হাতে দিল। ফুলগুলির দিকে হাত বাড়াইয়া খোকা অস্ফুট আবেদন জানাইয়াছিল বলিয়া নয়, ফুল ছিড়িতে আজকাল আর তার দ্বিধা হয় না। O rify tetritics o