পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/১৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চুরি চুরি খেলা y সুশীলের ঘর তিনখানার পিছনে প্ৰকাণ্ড কৃষ্ণচুড়ার ডগায় পড়ন্ত রোদ বিবৰ্ণ সোনার রঙ মাখাইয়াছে। আকাশে মেঘ নাই। কিন্তু কাৰ্তিকের কুয়াশার ইন্দিতে শূন্য ভরাট। রোদের রঙ তা আংশিক আত্মসাৎ করিয়াছে। তিনটি সিড়ি ভাঙ্গিলে একেবারে সুশীলের শয়নকক্ষে পৌছানো যায়। সুশীল শুকমুখে বিছানায় বসিয়া-একটু নিঃশব্দ হাসি দিয়া সে কমলাকে অভ্যর্থনা করিল। খোকাকে নিয়ে এলাম । তা দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু ওটাকে ফেলে এলেই ভাল করতেন। ওকে দেখলে জীবনে আমার যত ক্ষতি হয়ে গেছে সব একসঙ্গে মনে পড়ে। কমলা চমকাইয়া উঠিল। জীবনে যার বোধহয় সবটাই ক্ষতি, জীবনের সমস্ত ক্ষতির কথা তার একসঙ্গে মনে পড়া কি ভয়ংকর । সজল চোখে সে বলিল, আপনার কাছে মাপ চাইতেও আমার লাজ করে। জানেন, সব দেখেশুনে দিন দিন আমার স্নেহমমতা পৰ্যন্ত শুকিয়ে উঠছে। আপনার ছেলে আপনাকে ফিরিয়ে দিতে পারলে আমি বঁাচতাম । খোকাকে সে বিছানায় নামাইয়া দিল। ক্ষীণ শিশুটি যেন ক্রমেই তার অপরাধের মত অসহ ভারী হইয়া উঠিতেছিল। কমলা টুলটাতে বসিলে সুশীল বলিল, আপনাকে বলাই ভাল। খোকার জন্য আমার কোন নালিশ নেই। कभला न९४धडब्र बलिल, 6कन ? আপনার মধ্যে ও যে আমার আপনি হয়ে রইল। এই আমার পরম লাভ । না, কোন কিছুর জন্যেই আমার নালিশ নেই। কমলা নীরব হইয়া রহিল। নালিশ নাই ! বালিশের তলা হইতে একটি ক্ষুদ্র ছিটের জামার যে অংশটুকু বাহির হইয়া আছে সে যেন সেটা চেনে না, তাকে আসিতে দেখিয়া সুশীল যে জামাটি বালিশের নিচে লুকাইয়াছিল এ যেন সে অনুমান করিতে পারে না ! কি ভাবে তাকে সুশীল ? কমলার মনে হইল, এ তার শাস্তি । স্ত্রী-পুত্র বঁচিয়া থাকিতে শূন্য ঘরে শূন্য মনে এর দিন কাটে, ঘরের বিশৃঙ্খলতায়, ঘরের দেয়ালে দেয়ালে, ওই মলিন শূন্য শয্যায় বিষাদের প্রলেপ পড়িয়াছে। এ ঘরে এ ভাবে বসিয়া থাকার বাড়া শাস্তি আর কি হইতে পারে মানুষের ? অপরাধই বা তার কম কি ? কিছুই তা তার অজানা নাই। প্ৰতিকার প্ৰথম হইতেই সুশীলের আয়ত্তে ছিল ! যেদিন খুশী ওই রঙ-চটা তেরঙ্গে o xt-ffrifiws ryw o