পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/১৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাঘব মালাকার SWA রাঘবের গর্জনের চেয়ে বলরামের এই ঘোষণায় কাজ হয় বেশী। সবাই চুপ হয়ে যায় একেবারে, যারা প্ৰতিবাদী ছিল তারা পর্যন্ত। বুড়ী, পচার মা শুধু বিনিয়ে বিনিয়ে কঁদতে থাকে । গৌতমের কান্না, বিলাপ, অনুনয় বিনয়ের অন্ত ছিল না, রাঘব একবার দা’টা উচিয়ে ধরার পর সেও থেমে গিয়েছিল। এবার সে বিনিয়ে বিনিয়ে বলে, “আমায় ছেড়ে দে বাবা তোরা । আমায় মেরে কি হবে তোদের ? কাপড় পেয়েছিস, বামুনের ছেলেকে মেরে কেন মহাপাপ করবি ? ছেড়ে দে আমায় ।” বলরাম বলে, “কি করে ছাড়ি ? ছাড়া পেলে তুমি গিয়ে তা পুলিস আনবে বাবুঠাকুর।” গৌতম পৈতে ছুয়ে প্ৰতিজ্ঞা করে, বাপ-মারি নামে আর দেব-দেবীর নামে দিব্যি গালে, পুলিসকে সে কিছু বলবে না। “এ কথা কি মনে থাকবে বাবুঠাকুর ?” তখন হতাশ হয়ে প্ৰাণ বঁাচাবার শেষ চেষ্টা ক’রে গৌতম বলে, “শোন বলি, পুলিসকে আমি বলতে পারি না। সাধ থাকলেও পারি না।” “পার না ?” “না। বললে আমারি জেল হবে। এ কাপড় চােরাবাজারের মাল, পুলিস যখন শুধোবে কাপড় পেলাম কোখেকে, কি জবাব দেব বল ? সত্যি বললে যার কাছ থেকে এনেছি তাকে ধরবে, আমাকে ধরবে, কারবার ত ফাক হয়ে যাবেই, জেল হয়ে যাবে আমাদের। চোরা মাল না হলে কি এ-পথে মাল নিয়ে আসি, তোরাই বুঝে দ্যাখ। পুলিস কেন, তোরা কাপড় লুটে নিয়েছিস, কারো কাছে বলবার উপায় আছে আমার ? রাঘব বলে, “তা বটে। এটা ত খেয়াল করিনি মোরা।” সকলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে এতক্ষণে। বাবুঠাকুরকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন না করে ফেলে তাদের উপায় ছিল না, কিন্তু জীবন্ত একটা মানুষকে এভাবে মারতে কি সায় দেয় মানুষের মন ! বাবুঠাকুর নিজেই যখন চোর, তার চোরাই মাল কেড়ে নিলেও কি করতে পারবে বাবুঠাকুর ? ওকে ছেড়ে দিলে তাদের কোন ভয় নেই। বাঘব বলে, “তবে তুমি যাও বাবুঠাকুর। আপরাধ নিও না।” উঠে দাড়াতে গিয়ে গৌতম পড়ে যায়। কথা বলতে গিয়ে গলার আওয়াজ ow-fifts to to