পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/২২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

a বিবেক ‘আগুন করে হাতে পায়ে সেঁক দে লতা। কঁাদিস নে হারামজাদী, ওরা উঠে যদি কান্না শুরু করে, তোকে মেরে ফেলব।’ মণিমালার একটি হাত তুলিয়া সে নাড়ী পরীক্ষার চেষ্টা করিল। দু’হাতে দু’টি রুলি এখনো তার আছে। সজ্ঞানে এ রুলি সে কিছুতেই খুলিতে দেয় নাই। কাল সন্ধ্যায় জ্ঞান প্ৰায় ছিল না, তখন একবার খুলিবার চেষ্টা করিয়াছিল। চোখ কপালে তুলিয়া যন্ত্রণায় মুখ বিকৃত করিয়া মণিমালাকে খাবি খাওয়ার উপক্রম করিতে দেখিয়া সাহস হয় নাই। এখন অনায়াসে খুলিয়া নেওয়া যায়। সে টেরও পাইবে না। সকালেই ডাক্তারকে টাকা দেওয়া চলিবে, ওষুধপত্র আনা যাইবে। কিন্তু লাভ কি কিছু হইবে শেষ পর্যন্ত ? সেইটাই ভাবনার বিষয়। রুলি-বেচা পয়সায় কেনা ওষুধ খাইয়া জ্ঞান হইলে হাত খালি দেখিয়া মণিমালা যদি হার্ট-ফেল করে । সন্তু যখন ফিরিয়া আসিল, চারিদিক ফরসা হইয়া আসিয়াছে। মণিমালা ততক্ষণে খানিকটা সামলাইয়া উঠিয়াছিল। খুজিয়া নাড়ী পাওয়া যাইতেছে, নিঃশ্বাস সহজ হইয়া আসিয়াছে। ডাক্তার আসেন নাই শুনিয়া ঘনশ্যাম আরাম বোধ कब्रिळ । নিখিল ডাক্তার বলিয়া দিয়াছেন, বেলা দশটা নাগাদ আসিবেন । মোড়ের বাড়ির নতুন ডাক্তারটি ডাকা মাত্র উৎসাহের সঙ্গে জামা গায়ে দিয়া ব্যাগ হাতে রওনা হইতেছিলেন, হঠাৎ কি ভাবিয়া সন্তুকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি কঁাদছ কেন খোকা ? “মা মরে যাবে ডাক্তারবাবু।” ‘শেষ অবস্থা নাকি ?’ বলে ডাক্তার নিরুৎসাহ হইয়া পড়িলেন। তারপর ভাবিয়া চিন্তিয়া চারটে টাকার জন্য সন্তুকে বাড়ি পাঠাইয়া দিয়াছেন। কাছেই তি বাড়ি। তিনি প্ৰস্তুত হইয়া রহিলেন, টাকা নিয়া গেলেই আসিবেন। সস্তুকে তিনি আরও বলিয়া দিয়াছেন, নগদ চারটে টাকা। যদি বাড়িতে নাও থাকে তিনটে কি অন্ততঃ দু’টো টাকা নিয়াও সে যেন যায়। বাকী টাকাটা পরে দিলেই চলিবে । “তুই কঁাদিতে গেলি কেন লক্ষ্মীছাড়া ? এ ডাক্তারটি আসিলে মন্দ হইত না । ডাক্তারকে ডাক্তার, ছ ছ্যাচড়া। টাকাটা যতদিন খুশী ফেলিয়া রাখা চলিত। একেবারে না দিলেও e afiş çTivitelitik o