পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নেকী R” অশোক শাড়ীটা এনে দিলে। বারান্দার একদিকে একটু ঘেরা ছিল, শাড়ী নিয়ে নেকী সেখানে চলে গেল । অশোকের জামা কাপড়ের অতিরিক্ত জলটুকু ইতোমধ্যে প্ৰায় সবটাই করে গিয়েছিল, কিন্তু ভিজে জামার আলিঙ্গনটা বড়ই বিশ্ৰী লাগিছিল। জামাটা খুলে হাতে নিয়ে নেকীর প্রতীক্ষায় ঘরের মাঝখানে দাড়িয়ে অশোক একবার চারিদিকে চোখ বুলিয়ে নিল। প্ৰকাণ্ড ঘর। একপাশে দুটি বড় বড় খাট জোড়া লাগিয়ে পাতা রয়েছে। তাতে যে বিছানা আছে খাটের অর্ধেকটাও আবৃত করবার সাধ্য তার নেই। সেকেলে আসবাব, যেমন বিরাট তেমনি কদাকার। এক কোণে গোটা কুড়ি পঁচিশ হাড়ি কলসী, তাতে সংসারের চাল ডাল থাকে বোঝা গেল । পুরনো রঙচটা একটা কাঠের আলনা, সোজা দাড়াবার ক্ষমতা নেই, হেলে পড়েছে। ফরসা, মলিন, আন্ত এবং ছেড়া নানা রকমের নতুন পুরাতন ধুতি শাড়ী সেমিজ যত্ন করে গোছানো রয়েছে। চাচের বেড়ার গায়ে বঁাশের পেয়েকে একটা আয়ন ঝুলছে, কাছেই একটা চিরুণী গোঁজা। আয়নার নীচে একটা টুল, তার কাছে হাতল ভাঙা কাঠের চেয়ার। একটা আমাকাঠের সিন্দুক একটা কোণের সবটুকু দখল করে আছে। মাথা নীচু করে অশোক খাটের নীচে উকি মারল। ধুলোয় মলিন বড় বড় পিতলের হাড়ি কলসী ডেকচি ইত্যাদি থেকে আরম্ভ করে কুলো ধুচুনি পর্যন্ত সেখানে জমা হয়ে আছে। সোজা হয়ে দাড়াতেই দরজার কাছে নেকী খিলখিল করে হেসে উঠে বললে, ভূত দেখছিলেন নাকি ? না বাঘ। অন্ততঃ একটা শেয়াল যে খাটের নীচে চােখ তুলে অর্ধপথে সে থেমে গেল। মন থেকে রাগের জালা নিঃশেষে মুছে গিয়েছিল, বিদ্বেষশূন্য দৃষ্টি তুলে লন্ঠনের আলোতে সম্মুখের তরুণী নারীটির মুখের দিকে চেয়ে অশোক মুগ্ধ হয়ে গেল। তাড়াতাড়ি কাপড় ছেড়ে এসেছে, ভিজে চুল ভাল করে মোছা হয় নি। এক গোছা জলসিক্ত কুন্তল গালের পাশ দিয়ে লতিয়ে নেমে এসে বুকের ওপর লুটিয়ে পড়েছে। কপালে বিন্দু বিন্দু জলজমে আছে, আলো পড়ে মনে হচ্ছে কে যেন মেয়েটার কপাল বেড়ে মুক্তোর মালা পরিয়ে দিয়েছে। চোখের পাতা ভেজা, তার অন্তরাল হতে যে দৃষ্টি মেলে চেয়ে আছে তার যেন তুলনা নেই। নেকী লাল হয়ে চোখ নত করলে। হঠাৎ-আচ্ছা ত আমি । ভিজে o "N-ffŵns miw o