পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

फँनेि y হইয়া থাকিল না, গোয়ারের মত ফাসির হুকুম পাওয়ার ব্যাপারটাকে অবহেলা করিয়া একেবারে উড়াইয়াও দিল না, আবার এমন ভাবও দেখাইল না যে, ফঁাসির হাত এড়ানোর আনন্দে বিগলিত হইয়া পড়িয়াছে ! ভগবান ত আছেন, বিনা দোষে একজনকে তিনি শাস্তি দিতে পারেন ?'-এমন আশ্চৰ্য সরলতার সঙ্গে এমনভাবে গণপতি একবার এই কথাগুলি বলিল যে, শ্রোতাদের মনে তার প্রতি সত্য সত্যই একটু শ্ৰদ্ধার ভাব দেখা দিল, মনে হইল-আসিবার সময় লোকটার সম্বন্ধে যে ধারণা তাদের ছিল, লোকটা হয়ত সত্যই অতটা খারাপ নয় । আগন্তকদের মধ্যে এই পরিবর্তনটুকু টের পাইতে গণপতির বাকী রহিল না। জয়ের গর্বে ও আশার আনন্দে তার বুক ভরিয়া গেল। এবার তাহার বিশ্বাস হইতে লাগিল যে, সে পরিবে, তার ভাঙা মান-সন্ত্রমকে আবার সে নিটোল করিয়া গড়িয়া তুলিতে পরিবে। তার নামে চারিদিকে যে টি-টি শব্দ পড়িয়া গিয়াছেক্ৰমে ক্রমে একদিন সে শব্দ ক্ষীণ হইতে ক্ষীণতর হইয়া আসিয়া একেবারে মিলাইয়া যাইবে । তার সম্বন্ধে ঘৃণা ও অশ্রদ্ধার ভাব মরিয়া গিয়া মানুষের মনে আবার জাগিয়া উঠিবে গ্ৰীতি ও শ্রদ্ধা-মানুষের মাঝখানে মানুষের মত বঁচিয়া থাকিতে আর তার কোন অসুবিধা থাকিবে না । রাত্রি বাড়িয়া যাইতেছিল, বাহিরের সকলে চলিয়া গেলে, গণপতি আর বেশী দেরি না করিয়া সামান্য কিছু খাইয়া নিজের ঘরে শুইতে গেল। নবজীবনের সূচনা করিতে বাহিরের কয়েকটি লোকের কাছে খানিক আগে সে সাফল্যলাভ করিয়াছিল, তখনও তার মন হইতে তার মাদকতাভিরা মোহ কাটিয়া যায় নাই এবং খানিক পরে সেই জন্যই রামার সঙ্গে তার বাধিল বিবাদ । বিবাদ ? এমন প্ৰত্যাবর্তনের পর রামার সঙ্গে প্ৰথম দেখা হওয়ার রাত্ৰেবিবাদ ? হয়ত ঠিক তা নয় ; কিন্তু রুমা ঘরে আসিবার ঘণ্টাখানেক পরে দুজনের মধ্যে যে সব কথার আদান প্ৰদান হইল, সেগুলি বিবাদের মতই একটা কিছু হইবে । আবেগে উচ্ছসিত হইয়া উঠিবার সাহস দুজনের কাহারো ছিল না। ঘরে চুকিয়া রমা। তাই যেমন ধীর-পদে তার কাছে আসিল-সেও তেমনি ধীর ভাবেই তাহাকে বুকের মধ্যে গ্ৰহণ করিল। রমার ওজন অর্ধেক হাল্কা হইয়া গিয়াছিল, কিন্তু গণপতি সেটা ভাল রকম টের পাইল না । তার গায়ের জোরও যে অর্ধেক কমিয়া গিয়াছে ! o -fifts to