পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র অষ্টম খণ্ড.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sbr মানিক রচনাসমগ্র গজেন বলে, ছি ছি, তামাশা কীসের ? রাত হয়েছে, গায়ের দিকে খাবার-টাবার জুটবে না, তাই বলা তবু গরম মেজাজ নরম হয় না ভদ্রলোকের। হ্যা হ্যা জানি, সব জানি। তাই বলা যে সন্দেশ খেয়ে যান ! লোক দেখে টের পাও না লাটবেলাটের গদি পায়নি, লাখ দুলাখের পারমিট পায়নি ? খেতে জোটে না, ঠান্ড রাতে পায়ে হেঁটে চার মাইল পাড়ি দিচ্ছে, সন্দেশ খাবে ! যারা সব গুছিয়ে নিয়ে বসেছে, তাদের ডেকে সন্দেশ খাইয়ো । আমাকে কেন ! পাগলাটে বুড়োর বাচালতা মনে হয় না, জোরের সঙ্গে গুছিয়ে বলার ভঙ্গিটা সুন্দর, বক্তৃতার আমেজ আছে ! বাবটা সত্যই আন্তরিক। গজেন বলে, আপনারে চিনি চিনি মন করে চিনি চিনিই মন করবে। এখন আর চিনবে কেন ? দরকার কী ! মানুষটা আর দাঁড়ায় না, হনহন করে চলতে শুরু করে। ধীরে ধীরে কুয়াশ ঘন হচ্ছে, আরও অস্পষ্ট হয়ে এসেছে জ্যোৎস্না। দেখতে দেখতে সেই কুয়াশার সঙ্গেই ছায়ার মতো মানুষটা মিলিয়ে সুরমা বলে কী মেজাজ গো বাবা ! সত্যি চেনা নাকি ? rDD BDS SBB BB BD DDD সনাতন এতক্ষণে বলে, ভাবলাম দুটো কড়া কথা শুনিয়ে দি। অন্ত মুখ কীসের ? তা, কেমন 6शन्म धा ठूठन ! সুরমা হেসে বলে, মায়া হল তো মাগনা দুটো সন্দেশ খাইয়ে দিলে না কেন ? গজেন তাড়াতাড়ি দোকান বন্ধ করে। তাকেও খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে পাড়ি দিতে হবে এই পথে। ছোটোখাটাে যে চার্ষিপাড়ায় তার ঘর, এখান থেকে এক মাইল পুরো হবে না। কিন্তু নেংচে নেংচে গিয়ে পৌঁছতে তার প্রায় একঘণ্টা লেগে যাবে। পয়সার থলিটা কোমরে বাঁধা ছিল, চালের ছোট্ট পুঁটুলিটা ছেঁড়া চাদরের আস্ত কোণটাতে বেঁধে নিয়ে কঁধে ফেলে, বেগুন দুটাের বেঁটা বঁকিয়ে কোমরে গজে দু-হাতে মোটা লাঠিটা বাগিয়ে ধরে সে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে রওনা দেয় ঘরের দিকে। দিনের বেলা এখান থেকে তার ঘরের পাশের তালগাছ কটা চােখে পড়ে। গুলি লেগে পা-টা খোড়া হবার আগে কত সংক্ষিপ্ত ছিল এই পথটুকু। দিনে দশবার যাতায়াত করলেও মনে হত না পথ হাঁটা হয়েছে। আজ কত দীর্ঘ হয়ে গেছে। পথটা তার কাছে। পাড়ার কাছাকাছি পৌঁছে গজেন পথের পাশ থেকে ডাক শোনে, কে যায় ? একটু শোনো ভাই, শুনে is মনে হয় সেই মানুষটার গলা, তবু গজেন শক্ত করে মোটা লাঠিটা বাগিয়ে ধরে। ঠাহর করে দেখে বুঝতে পারে সামনে অল্প দূরে পা ছড়িয়ে বসে আছে একটা মানুষ-মনে হয়। সেই মানুষটাই। তবু সেইখানে দাঁড়িয়ে গজেন জিজ্ঞাসা করে, কে ? আমি রে বাবা, আমি !! ভয় নেই, একটু এগিয়ে এসো। আপনি ইস্টেশন থেকে এলেন না ? হাঁ, হাঁ, স্টেশন থেকে এলাম। তুমিই আমাকে সন্দেশ খেতে ডেকেছিলে নাকি ? রাগ করিস না বাবা, বড়ো বিপাকে পড়েছি। ! গজেন কাছে এসে বলে, আজ্ঞে না, আমি সে নয়। মোর পান-বিড়ির দুকান। আপনার হল 新?