পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র অষ্টম খণ্ড.pdf/১৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Stro মানিক রচনাসমগ্র দিতেই হবে। আমি জানি আমার সে সাধ্য নেই। বাবার সঙ্গে মানিয়ে চলছি কিন্তু স্বামীর সঙ্গে বনবে না। আমার ভয়ের কারণ হল এই কেমন, ঠিক না ? এতদিনে নিজের হৃদয়-মনের গভীর রহস্য ভেদ করতে পেরেছে বলে মায়াকে বেশ খুশি মনে হয়। কিন্তু সে একেবারে ভড়কে যায়। সুনীলের প্রশ্নে ! বনবে না ধরে নিচ্ছেন কেন ? বাবার যা কিছু আছে অর্ধেক পাবেন, বাবাকে যেটুকু মানেন সেটুকু মেনে চললেই অনেক স্বামী কৃতাৰ্থ হয়ে যাবে। মায়া মাথা নাড়ে।-সে তো অন্যভাবে মানিয়ে চলা। আমি জানি আমি কিছুতেই পারব না। ভাবলেও বিশ্ৰী লাগে। গা ঘিনীঘিন করে। আমার মধ্যে রসকষ নেই। কেন নেই ? মায়া বিব্রতভাবে হেসে বলে, যাঃ, আপনি সব গুলিয়ে দিলেন। ভাবছিলাম। আসল ব্যাপারটা বুঝি স্পষ্ট বুঝে গিয়েছি। তা তো নয়, রসকষ নেই কেন, এটাই আসল প্রশ্ন। সবার আছে আমার (नई (कम ? আমারও কিন্তু নেই। 6ननिन छिल छू।ि এক রকম কিছু না ভেবেই সুনীল প্ৰস্তাব করে, বহুদিন সিনেমা দেখি না। যাবেন ? বেশ তো চলুন না। ওরা কোনটাতে গেছে জানেন ? সেখানে গেলে জানা যেত ওদের কী রকম ছবি পছন্দ। ছবিগুলি শুনছি। নাকি যাচ্ছেতাই হচ্ছে আজকাল,-দু-একটা ছাড়া। মায়া বলে, ছায়াকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। ওর কোনো চেনা মেয়ে দেখেছে, সে নাকি বলেছে, ছবি ভালো নয়। কিন্তু বেশ মজার ছবি। তাহলে হাসির ছবি হবে। হালকা ভঁড়ামির ছবি। তবু চলুন দেখে আসি। অনিল আর ছায়া দেখতে গিয়েছিল বিকালের শোতে। চৈত্রের মাঝামাঝি, বেলা খানিকটা বড়ো হয়েছে। ভিড়ের সঙ্গে বাইরে বেরিয়ে অনিল কুদ্ধস্বরে বলে, এখুনি বাড়ি ফিরতে হবে। কবে পাস করব, চাকরি করব, তবে দুটো টাকা পাব। এমন রাগ হয় ভাবলে ! ছায়া হাতের একগাছি চুড়ি খুলে তার হাতে তুলে দেয়, কথা বলতে গিয়ে চাপা উত্তেজনা আর আবেগে গলা তার কেঁপে যায়। মরে গেলেও বাড়ি যাব না এখন। এটা বিক্রি করো। বাড়িতে কী বলবো ? बढ़ाव शशि (छ। অনিলের বিবেক নয়, পৌরুষে একটু বাধে। ইতস্তুত করে বলে, তোমার চুড়ি বিক্রি করে ছায়া ফুসে বলে, তোমার টাকা আমার চুড়িতে তফাত আছে নাকি ? ছবিতে দেখলে না মেয়েটা কী ভাবে এ যুক্তির পরে আর কথা কী ! সন্ধ্যাবেলা সেই ছবি দেখতে যায় সুনীল আর মায়া। শো ভাঙবার পর ভিড়ের সঙ্গে রাস্তায় নেমে এসে তারা দুজনেই যেন হাঁফ ছাড়বার জন্য খানিকক্ষণ বাক্যাহারা হয়ে থাকে। শেষে মায়া বলে, গা ঘিনীঘিন করছে। বাড়ি গিয়ে হাজার নাইলেও তো কাটবে না। ঠিক যেন দেশের বাড়ির খাটা পায়খানার তলায় গিয়ে দুঘণ্টা সময় কাটিয়ে এলাম।