Sno8 মানিক রচনাসমগ্র আমার বইটা এনে রেখেছেন ? ওদিকে যাবার সময় পাইনি। রেবা অভিমান করে না। বলে, সত্যি, সারাদিন যা খাটুনিটা খাটেন। আবার টিউশনিটা কেন নিতে গেলেন বলুন তো ? বাড়ির লোকেরাই নয় একটু কষ্ট করত। সুনীল বলে, কষ্ট কী আর ওরা করছে না। কষ্ট করাটা নিৰ্ম্মফল হচ্ছে এই যা আপশোশ। তুমি এক কাজ করো না কেন ? লাইব্রেরি থেকে নিজে বই এনে তো পড়তে পার। তার মুখে হঠাৎ আজ তুমি শূনে রেবা যেন চমকে ওঠে। বোঝা যায়। ভেতরে তার তোলপাড় করে উঠেছে। কোনোমতে বলে, ও সব বই কি সাধারণ লাইব্রেরিতে পাওয়া যায় ? তা বলতে পারব না। বইটা আমি আনব, কবে আনব বলতে পারছি না। আনলে তোমায় পড়তে দেব। যেখানটা বুঝব না বুঝিয়েও দিতে হবে। কিন্তু। 6ሱ দিন দিন কেমন রোগা আর মনমরা হয়ে যাচ্ছে ছেলেটা। সর্বদা অন্যমনস্ক ভাব, মুখে একটা চিন্তাক্লিষ্ট বৃক্ষতার ছাপ। সর্বদা বিরক্ত হয়ে আছে, যখন তখন কারণ্যে-অকারণে ভয়ানক চটে যায়। পড়াশোনা করে না, কোনোদিন বাইরে বাইরে কাটায়, কোনোদিন গোমড়া মুখে ঘরেব কোনায় মুখ গুজে থাকে। জিজ্ঞাসা করলে কিছু বলে না। দরদ দেখিয়ে দুবারের বেশি তিনবার কিছু জিজ্ঞাসা করলে একেবারে খোঁকিযে ওঠে। এ সমস্তের সঙ্গে বেড়ে যাচ্ছে তার টাকার চাহিদা । হঠাৎ মাকে বলে, আমায় দশটা টাকা দাও। দশ টাকা ? দশ টাকা কোথা পাব ? আমার ভীষণ দরকার। বাবার কাছে নয়। দাদার কাছ থেকে চেয়ে দাও। দাদা দেবে না। ওঁর কাছে আমি চাইতে পারব না, তুমি চাওগে । আমার ভীষণ বিপদ । বিপদ ? মা চমকে গিয়েও ধৈৰ্য ধরে বলে, কী বিপদ বলো ! সত্যিসত্যি বিপদ হলে কী দশটা টাকার জন্য আটকাবে ? তোর দাদাই ব্যবস্থা করে দেবে। আমি বলতে পারব না। দিলে দেবে, না দিলে দিয়ে না। গীেরী অনেক ভেবেচিন্তে নিশ্বাস ফেলে বলে, আচ্ছা বেশ দিচ্ছি। এবারের মতো। তুই আমাকে শেষ করবি অনিল ! কার কাছে চাইবো ? বাবার কাছে ? চেয়ে এনে দিতে পারব না। লুকিয়ে দশটা টাকা নিয়ে আসছি-হিসেবে কম পড়লে যখন জিজ্ঞেস করবে বলব। আমার দরকার ছিল, নিয়েছি।