পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র অষ্টম খণ্ড.pdf/৩২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সার্বজনীন V9R লাইট নিয়ে পয়ত্ৰিশ টাকা । শুনে এবার সবিতা চোখ বড়ো বড়ো করে তাকায়। এত ভাড়া ? একখানা ঘব পয়ত্ৰিশ টাকা ? নলিনী হাসে। ভাড়া আজকাল এই রকম দাঁড়িয়েছে। দু-পাঁচটাকা কমবেশি হবে। তোমরা দশ টাকায় অমান ভালো একখানা ঘর পেয়েছ। শূনে তাই তো অবাক হয়ে গেছি। আত্মীয়তা আছে ? না। একমাস আগে চেনাও ছিল না। ওরাও বোধ হয় রেট জানেন না, তাই। বাড়ি ফিরেই সে বলে, আর এখানে থাকা হয় না মা। কেন ? ত্ৰিশ পযত্ৰিশ টাকা ভাড়ার ঘরে থাকা আমাদের পোষাবে না। অত কেন ? ওরাই তো দশ টাকা ভাড়া বলে দিয়েছে। সে ওরা দয়া করে বলেছে। আমরা দয়া নিতে যাব কেন ? একটা কম ভাড়ার ঘর খুঁজে নিতে হবে তাড়াতাড়ি ! মানন্দ চটে বলে, তুই বড়ো বাড়াবাড়ি কবিস ! সবিতা শাস্তভাবে বলে, বাড়াবাড়ি কীসেব মা ? বাবা থাকলে এ রকম দয়া নিতেন ? তুমি পরের ঘব থেকে এসেছি, তোমার গায়ে লাগে না,-আমি তো বাবার মেয়ে ! এমনি উপকার নিতে পাবি, মাসের পর মাস। দয়া নিতে পারব না হাত পেতে । পঙ্কজকে সে জিজ্ঞাসা করে, কম ভাড়ার ঘর পাওয়া যায় কোথা ? কত কম ? আট-দশটাকা । পঙ্কজ সোজাসুজি ডোবাটার ওপাশের বস্তিটা দেখিয়ে দিয়ে বলে, ওখানে। আরও কমেও পাবে-তিন-চারটাকার ঘরও আছে। এখানে থাকবে না বুঝি ? •ा ! কারণটা শুনে পঙ্কজ একটুও আশ্চর্য হয় না। ববং সায় দিয়ে বলে, আমিও তাই ভাবছিলাম। সবিতা আশ্চর্য হয়ে বলে, বলেন কী ! কী থেকে ভাবলেন ? পঙ্কজ হেসে বলে, তোমার মাথা একটু খারাপ আছে জানি তো ?

?

অন্য কেউ হলে খুশিই হত-আরও সুযোগসুবিধা আদায় করার চেষ্টা করত। কিন্তু তোমার কিনা মাথা খাবাপ, ছেলে সেজে পথে বার হও, তুমি ঠিক উলটােটা ভাববে। গরিব হয়ে বড়োলোকের সঙ্গে খাতিরের সম্পর্ক রেখে তুমি চলতে পারবে না। সবিতা খুশি হয়ে বলে, তাই বলুন ! তুলসী মহেশ্বরদের বাড়ি কাজ করতে এলে সবিতা জিজ্ঞাসা করে, তোমাদের ওদিকে ঘর খালি আছে বলতে পাের ? কেন গা ? ঘর কী হবে ? डांएों (नव। এখানে রাইবে না ? এ ঘর কী দোষ করলে গা ? ভাড়া বেশি তো নয় মোটে ! কপালজোরে দশ টাকায় এমন ঘর পেয়ে গেছ ! কপালজোরে কােজ নেই। তুমি যাবার সময় আমায় ডেকে নিয়ে যেয়ো।