YS)b”b” মানিক রচনাসমগ্ৰ অসহায় নিরূপায় উদবাস্তু মানুষে-ভরা শিয়ালদ স্টেশন। শিশু থেকে বুড়ো, মেয়েপুরুষ, ছোটাে বড়ো পরিবার, একলা মানুষ। একদিন তাবাও নেমেছিল এই স্টেশনে এমনই উদবাস্তুদের ভিড়ের মধ্যেআজও সেই ভিড় কমেনি। এই ভিড়ের মধ্যে খুজে বাব করতে হবে সমীরকে। চারিদিকে তাকায় আর সুরমা ভাবে, সমীবকে নয় নিজের দোষে এখানে এসে শেষশয্যা পাততে হয়েছে। মরণের প্রতীক্ষায়, এরা কার কাছে কী দোষ করেছিল ? কী পাপে কার পাপে এই শিশু নারী যুবক বৃদ্ধের এই পরিণাম, এই শাস্তি ? একপ্রাস্তে সমীরকে পাওযা যায়। ভঁাজ করা শতরঞ্চিত সে একটা কাপড়েব পুঁটুলি মাথাব্য দিযে শুয়েছিল। ৩ার দিকে একনজর তাকালেই তার অবস্থা সম্পর্কে সমস্ত সন্দেহের মীমাংসা হয়ে যায়। সুরমা শিউরে উঠে চোখ বোজে। মহেশ্বর নাম ধরে ডাকতে সমীর অতিকষ্টে চোখ মেলে তাকায়। খানিকক্ষণ শূন্যদৃষ্টিতে বিহুলের মতো চেসে থাকে। সুরমা তার গায়ে হাত দেয়। জুর নেই দেখে সে পরম স্বস্তি বোধ করে। মহেশ্বর বলে, আমাদের চিনতে পারছি না ? একটু মাথা হেলিয়ে সমীর জানায়, চিনতে পেরেছে। কথা বলবার জন্য ঠোঁট ফাক করে, কিন্তু গলা দিয়ে আওয়াজ বেবোয না। মহেশ্বর মেয়ের মুখের দিকে তাকায়। একটা ট্যাক্সি ডেকে আনি ? অ্যানো । অগত্যা বাড়িতেই আনতে হয় সুমীরকে । উপায় কী। সত্যই তো তাকে প্লাটফর্মে পড়ে একলা একলা বিনা যত্নে বিনা চিকিৎসায় মবতে দেওয়া যায় না--যািত অন্যায়ই সে করে থাক ! যথাসাধ্য চেষ্টা করতেই হবে তার মরণকে ঠেকাবাব ଅଖିଳ୍ପା | যদি বাঁচানো যায় তাকে, যদি সুস্থ সবল করে তোলা যায় চিকিৎসা আর সেবা দিযে, হযতো শক্তি ফিরে পেলেই আবার নিজের মূর্তি ধরবে। কিংবা হযতো এই অভিজ্ঞতা মোড় ঘুরিয়ে দেবে তার জীবনেব। দেখা যাক কী দাঁড়ায়। জামাকাপড় ছাড়িয়ে সমীরকে বিছানায় শুইয়ে দেওয়া হয়-জীবনটা এভাবে ধ্বংস না করলে এ বাড়িতে এসে যে খাটের যে বিছানায় মহাসমাদরের সঙ্গে শোয়ার অধিকার তার সর্বজনস্বীকৃত ছিল ! বিপিনকে ডাকা হয়। বিপিন খুব ভালোভাবে পরীক্ষা করে সমীরকে, ডাক্তারের পক্ষে যতখানি যত্ন নিয়ে পরীক্ষা করা সম্ভব । পরীক্ষা শেষ করে বলে, একটু গরম দুধ আনতে হবে। সুরমার বাচ্চা দুটির জন্য যে দুধৰ্টকু ছিল সেটা গরম করে এনে সমীরকে খাইয়ে দেওয়া হয়। দুরুদুবু বুকে সকলে অপেক্ষা করে ডাক্তারের রায় শোনার জন্য। বিপিন পরমেশ্বরের ঘরে গিয়ে বলে, ওষুধ একটা লিখে দিচ্ছি।--তবে ওষুধের চেয়ে সেবা। আর পথ্যের দরকার বেশি। আর কিছু হয়নি, শরীরটা একটু দুর্বল।