পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র নবম খণ্ড.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফেরিওলা বর্যাকলটা ফেরিওলাদের অভিশাপ। পুলিশ জুলায় বারোমাস। দুমাসে বর্ষা হয়রানির একশেষ করে। পথে ঘুরে ঘুরে যাদের জীবিকা কুড়িয়ে বেড়ানো তাদের প্রায় পথে বসিয়ে দেয়। না ঘুবলে পয়সা নেই ফেরিওলার। তবে মানেই কোনোমতে পেট চালানোরও বরাদ নেই। আকাশ পরিষ্কাব দেখেই জীবন বেরিয়েছিল। ঘণ্টাখানেক ঘুরতে না ঘুরতে বৃষ্টি নেমে এসেছে। পুরানো জীৰ্ণ বাড়িটােব ঢাকা বারান্দায় আশ্রয় নিয়ে মনে মনে সে বর্যাকে অভিশাপ দেয়। কিন্তু দেহটা যেন সায় দিতে বাজি হয় না। খানিকক্ষণ বিশ্রাম করার সুযোগটাকে সংগ্রহে বরণ কবীতে চাষ। দিন দিন যেন আবও বেশি বেশি দুর্বল মনে হচ্ছে শবীরটা। বর্ষা বাদ সোধেছে। রোজগাবে, খাওয়া আরও কমে গেছে। আপনা থেকে, সেই জন্য কী ? এক র্কান্ধব শাড়ি চাঁদব আব্ব অন্য কঁধের গামছাগুলিব ওজন খুব বেশি নয়। ভারী হওয়ার মতো বেশি মাল সে কোথায় পাবে ? এই সেদিন পর্যস্ত শুধু গামছাই ফেরি করত, কযেক মাস যাবত কিছু শাড়ি 'আব বিছানাব চাদব নিয়ে বেবোয়। তবু এইটুকু ওজন কঁধে নিযে ঘণ্টাখানেক ঘুরেই যেন গাযেল জোর ফুরিয়ে আসে, হাঁটতে বীতিমতো কষ্ট হয়। শাড়ি চাদর গামছা চাই বলে হাঁক দিতে যেন দমে কুলোয় না, বুকে লাগে, কাশি আসে ।

  • iछि अrिछ ४ পাশেব দবাজার একটা পাট খুলে দাঁড়িযেছে ছ-সাতবছরের হাফপ্যান্ট-পরা একটি মেয়ে। কিন্তু জি জ্ঞাসাটা তাব নয়। দৰবজাব আড়াল থেকে মেয়েলি গলায় প্রশ্নটা এসেছে।

শাড়ি আছে মা ! নেবেন ? কই দেখি । একদিকে মিশকালো অপরদিকে টুকটুকে লালপাড়ওলা মিহি শাড়িটা জীবন ছোটো মেযেটিব হাতে তুলে দেখ। তার সাধারণ মোটা তীতের শাড়িব মধ্যে এখােনই সব চেযে সেরা এবং সব চেয়ে দামি কাপড়। আজ প্রায় দশ বাবোদিন কাপড়টা নিয়ে ঘুবছে, বিক্রি হয়নি। দাম শুনে সবাই ফিরিযে দেয়। দািবদস্তুর পর্যন্ত কবে না। এখানেও তাই ঘটে। দাম শোনার পর ফিরে আসে কাপড়টা। কম দামের নেই ? তিন-চারখানা রঙিন তীতের শাড়ি মেয়েটির হাতে ভিতরে যায় আসে, আসল দরদস্তুর শুরু হয় লালপাড়, ফিকে সবুজ জমির শাড়িখানা নিয়ে, জিনিসটার গুণকীর্তন করতে করতে জীবন দশ টাকা থেকে নামে, অপর পক্ষ চার টাকা থেকে অল্পে অল্পে ওঠে। রফা হয় ছটাকায়। দািব করতে পাকা হয়ে উঠেছে মেয়েরা। ফেরিওলাকে একেবারে অর্ধেকের চেয়ে কম দাম বলে বসতে পুবুযের সংকোচ হয়, মেয়েদের একবার ভাবতেও হয় না। একটি টাকা আর সিকি দুয়ানিতে মিলিয়ে মেয়েটি দুটি টাকা তুলে দেয় জীবনের হাতে। বাকিটা দুদিন পরে নিয়ো। 始 ধারে তো দিতে পারব না মা। সামান্য কারবার, দাম ফেলে রাখলে পোষায় না মা।