পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র নবম খণ্ড.pdf/৫৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○ 28 মানিক রচনাসমগ্ৰ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডায়েরিতে উল্লেখ পাওয়া যায যে, তিনি উপন্যাসটি ক্যালকাটা পাবলিশার্সের ক্ষিতীশ সরকাবের অনুরোধে ১৯৫৩ সালের পুজোর আগেই সম্পূর্ণ করে ছাপার জন্য তাকে দিয়ে দেন। যদিও লেখকের অভিপ্রায় ছিল পুজোর পরে সেটি সম্পূর্ণ কবার। দারিদ্র্য ও অসুস্থতার আক্রমণের মধ্যেই উপন্যাসটি লিখে শেষ করেন। তিনি। ১৯২৯ সালে (ভাদ্র ১৩৩৬) বিচিত্রা পত্রিকায় ব্যথার পূজা নামে তার একটি ছোটােগল্প প্রকাশিত হয়। উক্ত ঘটনার তেইশ বছর পরে উপন্যাসের নতুন এক সূত্রপাতের ফলেই তেইশ বছর আগে পরে শীর্ষক এই গ্ৰন্থ লিখিত হয়। সুতরাং ব্যথার পূজা গল্পটিই বর্তমান উপন্যাসের উৎস ও উপকরণ। ১৯৩৫ সালে প্রথম গল্পগ্রন্থ অতসী মামী প্রকাশের সময়ে ব্যথার পূজা-কে কেন তিনি বাদ বেখেছিলেন, উপন্যাস সূচনায় লেখক তার কৈফিয়ত স্বরূপ বলেছেন : তেইশ বছব আগে ছাত্রজীবনে একটি কলুণ কাহিনি বচনা কবেছিলাম। “অতসীমামী” নিয্যে গল্প লেখা শুধু কবলৈ পব এটি আমাব দ্বিতীয় লেখা। কাহিনিটি প্রকাশিত হযেছিল বিচিত্রায। সম্পাদকেবা নুতন লেখকেৰ বসালো গল্পও স্বেচ্ছায খুশি হয়ে ছাপেন বন্ধুদেব সঙ্গে বাজি বেখে এটা প্রমাণ কাবাব জন্য লেখা ‘অতসীমামী’ বাব হবার পাব বিচিত্র-সম্পাদক শ্রদ্ধয উপেনদাব তাগিদ আবি উৎসাহেই দুনাম্বব কাহিনিটি লেখা হয। অতসীমামী’ও কবুণ বসে ফেনানো কাহিনি। পবে এই কাহিনিটিৰ নাম দিয়ে গল্পসংকলন বােব কবতে আমাব দ্বিধা হয়নি। কাবণ, বাস যাই থােক, যতই বোমান্টিক হোক, ওটা ছিল সম্পূর্ণ গল্প। ওই কাহিনি সংকলনেশ মধ্যে ‘অতসীমামী’ব পাবেই ‘ব্যথাব পুজা’কে ঠাই দেবাব লোভ সামলাতে নিজের সঙ্গে কী লড়াইটাই কব৩ে হযেছিল। অনভিজ্ঞ তবুণ লেখক আমাকে । এ তো গল্প নয। এ যে অসম্পূর্ণ কাহিনি। মাসিকেল পাতায্য জীবনেৰ খণ্ডিত একপেশে অসম্পূর্ণ কাহিনি ছাপানোবা ছেলেমানুষিব জেব তো গল্পসংকলনে টানা চলে না । কাহিনিটিকে সম্পূর্ণতা দেবােব দায়িত্বই কেবল নয, বাস্তবকে ফাঁকি দিযে আব্ব সং৩াকে আড়ালে বেখে কীভাবে ফেনিল ভাবালুতাব গল্প লেখা যায সেটা দেখিযে দিয়ে সাহিত্যে ‘বাগাব পূজা’ব নজিব বাতিল কৰবাব দাযিত্বও আজ তেইশ বছৰ পাবে পালন কবছিা! দু-একটি সামান্য ভুল-ত্রুটি সংশোধন কবে বিচিত্রায় প্রকাশিত অসম্পূৰ্ণ কাহিনিটি অবিকল তুলে দিযে আমাদেব উপন্যাস আবিস্তু কিবা যাক মা বচনাসমগ্র ৯ পৃ ২১৯ এইভাবে ব্যথার পূজা গল্পটিকে প্রায় অপরিবর্তিত রেখেই তেইশ বচ্চব আগে পাবে উপন্যাসেল সূত্রপাত। তাবপর গল্পটির মধ্যে নিহিত সূত্রগুলির সম্প্রসারণে কাহিনিব পুনর্বিন্যাস ঘটানো হযেছে। এই অভিনব শৈলীর পরীক্ষাগত কারণেই উপন্যাসটির বিশেষ গুরুত্ব আছে। লেখকেব। অন্যান্য একাধিক বচনাযা যেমন, এই উপন্যাসেও ধর্ম ও নেশা। এতদুভয় বিষয়ে লেখকের তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণ দেখা যায। উপরিউদ্ধৃত সূচনা-অনুচ্ছেদে অতসী মামী নিয়ে গল্প শুরু কবার পব বিচিত্রায় প্রকাশিত র্যথাব পূজা গল্পটিকে লেখক 'এটি আমার দ্বিতীয় লেখা’ বলেছেন। তথ্যগতভাবে অবশ্য মন্তব্যটি নির্ভুল নয়। অতসী মামী ও পরবর্তী গল্পগুলির প্রকাশকালীন তথ্য নিম্নবুপ : অতসী মামী विSिद्धां পৌষ ১৩৩৫ (অতসী মামী গল্পসংকলন) শেষ মুহুর্তে গল্পগুচ্ছ (মাসিক পত্রিকা) মাঘ ১৩৩৫ (অগ্রস্থিত) বাকমাবি মানসী ও মর্মবাণী বৈশাখ ১৩৩৬ (মিহি ও মোটা কাহিনি গল্পসংকলন) নেকী ffSi আষাঢ় ১৩৩৬ (অতসী মামী গল্পসংকলন) ব্যথাবি পূজা fisi ভাদ্র ১৩৩৬ (আগ্রস্থিত) আরোগ্য উপন্যাসের উপাদান থেকে লেখক যেমন একাধিক ছোটোগল্প নিৰ্মাণ করেছেন (আরোগ্য উপন্যাসের গ্রন্থপরিচয় দ্রষ্টব্য), তেমনই তেইশ বছর আগে পরে উপন্যাস থেকেও দুটি গল্পের উপাদান পেয়েছিলেন লেখক। দুটি গল্পই অগ্রস্থিত। কোনো সংকলনে এ যাবৎ অন্তর্ভুক্ত হয়নি। প্রথমটির নাম অগ্নিশুদ্ধি, প্ৰকাশিত হয় গল্পভারতী ১৩৬০ শারদীয় সংখ্যায় এবং দ্বিতীয়টি রত্নাকর, প্ৰকাশিত হয় মুখপত্র নামক একটি পত্রিকার দ্বিতীয় বর্ষ ১৩৬০ শারদীয় সংখ্যায়। মানিক রচনাসমগ্রের পরবতী সংযোজন খণ্ডে উক্ত অগ্রস্থিত গল্পগুলি অন্তর্ভুক্ত হবে।