পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র পঞ্চম খণ্ড.pdf/২০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আজ কাল পরশুর গল্প S» «ጋ ó? হারাধনের কবলে দিয়ে আসবে। কিন্তু তবু ভাগ্নিটার জন্য সে জ্বালাতন হয়ে উঠেছে। ওকে দেখলেই মন তার দাম কষা শুরু করে ! হাবাে তার সঙ্গেই বার হয়। অনেকক্ষণ হাঁ করে থাকায় লালা গড়িয়ে পড়েছিল, সসপ করে একবার লালা টেনে সে মুখটা বন্ধ করে দেয়। কয়েকটা বাড়ি পরেই হাবোর বাবা দয়ালের খড়ের ঘর। গজেনের সঙ্গে মেয়েকে আসতে দেখে দয়াল ভুকুটি করে তাকায়, কিন্তু গজেন কাছাকাছি এলে তার মুখখানা বেশ অমায়িক মনে হয়। (ठक् ५qक नि निलेि मां दादा ? দেব দেব। পরশু কি তাঁরশ্ব নিয়ে আসব সঙ্গে। কোটের বা হাতটা বুলিছিল। লড়বড় করে, ডগাটা পকেটে গুজে সে খাল ধারে এগিয়ে যায়। মিলিটারি, সরকারি, আধা-সরকারি। আর লাইসেনি নৌকা চলছিল খাল দিয়ে। একটা নীেকাকে সে হাঁক দেয়, জানাযা তার পাশ আছে। নীেকা ধারে এসে তাকে তুলে নেয়। কাটিবাজারে সমারোহ ব্যাপার। চারিদিকে অস্থায়ী চালাঘরের অরণ্য, মাছির মতো মানুষের ভিড়, নতুন রাস্ত কঁাপিয়ে হরদম লরিব আনাগোনা। ফাকায় পাহাড় সমান স্তুপাকার চালের পচা গন্ধে চারিদিক মশগুল । হারাধনকে গজেন ক্ষেস্তির ঘরে খুঁজে বার করে। হারাধন লোকটা বেঁটে ও বলিষ্ঠ, ঘাড়েগর্দানে এক করা, বয়স প্ৰায পঞ্চাশ, মাথার চুলে পাক ধরেছে। এই অবেলােয মদ খেয়ে চোখ লাল করে ফেলেছে। মাগি চাই একটা ! গজেন তাকে খবরাখবর দেবার পর হারাধনা বলে এক টোক মদ গিলে । ছোটো ছেলে দিয়ে একদিকে যেমন সুবিধা আছে, অন্যদিকে তেমনি অসুবিধাও অনেক। ছোটাে ছেলে যে কোনো বাড়ি গিয়ে যে কোনো মেয়ের সঙ্গে কথা কইতে পারে, কেউ কিছু সন্দেহ করে না। মেয়েলোক কেউ আনাগোনা করলে বরং খটকা লাগতে পারে লোকের মনে কিন্তু এগারো বছবের ছেলে যে মেয়ে ভজানোর কাজে লেগেছে লোকের এ ধারণা সহজে হয় না। কিন্তু অতটুকু ছেলেব কথাতে আবাব ভরসা করতে মেয়ের সাহস পায় না, এই মুশকিল। খাঁটি গোরস্ত ঘরের দু তিনটি মেযে প্রায় তৈরি আছে, চপলার মতো চালাকচাতুর হাসিখুশি নাদুসনুদুস একজন মাগির এখন একবার গায়ে ঘুরে আসা দরকার। শাড়ি গয়না পরে গিয়ে চক্ষুষ প্রমাণ দেখিয়ে আসবে ওদের যে ওদের জন্যও কেমন পেটভরা খাওয়া, ভালো ভালো কাপড় আর দামি দামি শাড়ি গয়না রয়েছে তৈরি হয়ে, কটিবাজারে এসে খেটে উপাৰ্জন করে নিলেই হয়। বেশি গয়না না কিন্তু। গজেন তা জানে। বেশি গয়না দেখলে খটকা লাগে মানুষের মনে। গাবিব মানুষের মনে । না, বেশি গয়না না। দুদিন পরে ফুল, একটিন কেরোসিন এবং আরও নানারকম জিনিসপত্র নিয়ে গজেন নীেকায় কাণকলি আসে। ফুল দেখতে বিশেষ সুন্দরী নয়। কিন্তু তার চেহারায় একটা আশ্চর্য বৈশিষ্ট্য আছে ঘরোয়া ভাবের। মা শিশুকে আদর করতে করতে একেবারে গদগদ হয়ে পড়লে তখন তার যে রকম মুখের ভঙ্গি হয় তারই স্থায়ী ছাঁচে ঢেলে যেন মুখখানা গড়া হয়েছে ফুলের। তার কথা মিষ্টি, হাসি মোলায়েম। তবু তাকে যারা চেনে তারা তাকে ভয় করে। এই শাস্ত নম্র গোরস্ত বাউটির মতো চেহারার ভিতরে যে বুদ্ধি আছে তার ধারে অনেকে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে। কণিকালি পৌঁছে একটা দুঃসংবাদ শোনা যায়। কোনো এক নারীসংঘ থেকে দু জন মহিলা কমী গাঁয়ে এসেছে আগের দিন সকালে। বৈরাগী দাসের সেই বিউটাকে তারা সঙ্গে এনেছে কটিবাজারের