পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/১৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOKS. in অতসী মামি Strs) অনিন্দিতা মৃদু হেসে বললে, রোজ সকালে পরাশরেব কাছে তবে শিখলে কী ? সকালটা যে তোমাদের পুকুবের জলেই কাটত ! গলা উচু কবে সে ঘাটের পরাশরকে চেচিয়ে বললে, আমরা ডুবে থাকাৰ কম্পিটিশন দিচ্ছি পরাশর, তুমি আম্পায়ার। পার্শিয়ালিটি কোরো না। এক হাতে শিপ্রার গলা জড়িয়ে ধনে আরেক হাতে জল কেটে অনিন্দিতা তলিয়ে গেল। পরাশর জামা খুলে সিঁড়ি বেয়ে জলের ধারে নেমে এসেও জলে বঁাপিয়ে পড়ল না। ফিরে গিয়ে ঘাটেব পাকা আসনে বসে জামাটি গায়ে দিয়ে ধীরে ধীরে বোতাম আটকাতে লাগল। অনিন্দিতা ও শিপ্ৰা তখন ভেসে উঠেছে। তার নাম ধরে শিপ্রার তীক্ষ। সুতীব্র চিৎকার আবার যখন পুকুরের শাস্ত জলের তলে অকস্মাৎ স্তব্ধ হয়ে গেল তখনও তার শেষ বোতামটি আটকানো হয়নি । এবার যখন তারা ভেসে উঠল শিপ্রা নির্বাকি হয়ে গেছে। অনিন্দিতা তাকে টেনে ঘাটে নিয়ে এল। অতিকষ্টে ওর প্রাণবাক্ষা করেছে পরাশর। নতুন সাঁতার শিখে অতদূরে ওর যাওয়া উচিত হযনি। ঘাটে তুলে নিয়ে যাও, আমি শাড়িটা খুঁজে না এনে উঠতে পাবছি না। পাবদিন শিপ্রাকে স্টিমারে তুলে দিযে অনিন্দিতা বললে, সত্যি বলছি শিপ্রাদি তুমি ডুবে যােচ্ছ পবাশব তা বুঝতে পারেনি - “লাচ্চাড়া আমি ছিলাম। কিনা। আমি এমন সাঁতাব জানি যে পরাশরকে পর্যন্ত আমি জলে ডুবিযে মেরে ফেলতে পারি। আমি ছিলাম বলে ও জলে নামা দরকাব মনে করেনি। শিপ্রা কিছু বলল না। নদীর জলীয় বাতাসে তার শীত করছিল। জলের দেশে এসে পুকুবের জলে আব্ব চোখের জলে তার দুটি চোখ লাল হয়ে গেছে। জলে ডুবে আকস্মিক অপমৃত্যু লাভের এটা পরবর্তী অবস্থা ।