পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOKS. in অতসী মামি নীলমণি বলিল, ঝেডে ঝেডে পাত না। নিভা বলিল, না না, ঝাড়িসনি!! খুলোয় চাদিক অন্ধকার হয়ে যাবে। নিভা ছেলেকে স্তন দিতেছিল, কথাটা শেষ করিযাই সে দমক মারিয়া চৌকির দিকে পিছন কবিয়া বসিল । নীলমণি চাহিয়া দেখিল, বড়োছেলের পিসে চাদব ফেলিয়া চৌকিতে উঠিযা বসিযাছে। লন্ঠনেব স্তিমিত আলোয্য পিসের মূর্তি দেখিয়া নীলমণি শিহবিদ্যা উঠিল। একটা শব মোন সহসা বঁচিয়া উঠিয়াছে। মাথার চুল প্ৰায ন্যাডা করিযা দেওয়ার মতো ছোটাে ছোটাে করিয়া ছাঁটা, চোখ যেন মাথার অর্ধেকটা ভিতরে চলিয়া গিয়াছে, গালের ঢিলা চামড়ার তলে হাড উঁচু হইয়া আছে। বুকের সবগুলি পাঁজর চােখ বুজিযা গোনা যায়। বুকেল বঁপাশে কী ঠিক চামডার নীচেই তৃৎপিণ্ডটা ধুকধুক কবিতেছে। পিসে নিশ্বাসের জন্য হাঁপাইতেছিল। খানিকপবে ক্ষীণস্বলে বলিল, একটা জানলা খুলে দিন । নীলমণি সভযে বলিল, দে তো শামা, জানালাটা খুলে দে। শ্যামা আবও বেশি ভযে ভযে বলিল, ঝাড হচ্ছে যে বাবা । হোক, খুলে দে। শামা পশ্চিমেব ছোটো জানালাটি খুলিযা দিল ; ঝড় পুবদিক হইতে বহিতেছিল, মাঝে মাঝে এলোমেলো একটু বাতাস আর ছিটে-ফোটা একটু বৃষ্টি ঘরে ঢোকা ছাড়া জানালাটি খুলিয়া দেওয়াম বিশেষ কোনো ম্যাবাত্মক ফল হওযাব সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু ভীরু নিভা ছেলেব গাযে আর এক পবিত & SOG কাপড জডাইয দিল । পিসে বলিল, ঘুমেব ঘোবে কখন চাঁদব মুডি দিযে ফেলেছি, আর একটু হলেই দম আটকাত । বাপ । নীলমণি জিজ্ঞাসা কবিল, আপনাব অসুখ আছে নাকি ? পিসে ভণ্ডািসনাব চোখে চাহিয়া বলিল, খুব মোটা-সোটা দেখছেন বুঝি ৬ অসুখ না থাকলে মানুষেব এমন চেহাবা হব ? চার বচ্ছর ভূগছি মশায়, মবে আছি। একেবারে। যম ব্য’, ‘ও কানা, এত লোককে নিচ্ছে আমায়া চোখে দেখতে পায় না। যে কষ্টটা পাচ্ছি মশায়, শত্ৰুও যেন –- ব্যাবামটা কী ? পিসে রাগিয়া বলিল, টেব পান না ? এমন করে শ্বাস টানছি দেখতে পান না ? পাবেন কেন, আপনার কীী। যাব। তয় সে বোঝে। বোঝা গেল, পিসের মেজাজটা খিটখিটে। নীলমণি নম্রভাবে সাস্তুনা দিয়া বলিল, আহা সেবে যাবে, ভালো মতো চিকিচ্ছে হলেই সেরে যাবে। পিসে বলিল, ই, সারবে। আমাকাঠেব তলে গেলে সাববে। চিকিচ্ছের কি আর কিছু বাকি আছে মশায়? ডাক্তার কববেজ জলপাডা কিছুটি বাদ যাযনি। আজ চার বছর। ডাঙায-তোলা মাছের মতো খাবি খাচ্ছি, কোনো ব্যাটা সারাতে পারল! কথার মাঝে মাঝে পিসে হাপরের মতো শ্বাস টানে, এক একবার থামিয়া গিয়া ডাঙায় তোলা মাছের মতোই চোখ কপালে তুলিয়া খাবি খায়। নীলমণির গায়ে কঁটা দিতে লাগিল। বাতাস! পৃথিবীতে কত বাতাস! তবুও ফুসফুস ভরাইতে পাবে না। অন্নপূর্ণার ভান্ডারে সে উপবাসী, পঞ্চাশ মাইল গভীব বায়ুস্তরে ডুবিয়া থাকিযা ওর দম আটকাইল।