পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOOkS. in দিবারাত্রির কাব্য V. SS আটকাবে ? শুধু যে নিজের জ্বালায় চলে যাচ্ছি তা ভেব না, হেরম্বা। আমার মতো মা কাছে থাকলে আনন্দ শান্তি পাবে না। আমি কারণ খাই, আমার মাথা খারাপ, আমার স্বভাব বড়ো মন্দ, হেরম্ব ! তোমার মাস্টােবমশায় আমাকে একেবারে নষ্ট করে দিয়েছে। হেরম্ব চুপ করে থাকে। আকাশে খণ্ড খণ্ড মেঘ বাতাসের বেগে ছুটে চলছিল। এখানে দাঁড়িয়ে সমুদ্রেব ডাক শোনা যায়। আনন্দকে দেখো, হেব্বস্ব । দুঃখ দিযো না ওকে । তোমাল মাস্টারমশায়ের হাতে আমার যে দুৰ্দশা হযেছে। ওরা যেন সে রকম না হয়। টাকা পযসা যা রোজগার করেছি। সব রেখে গেলাম। আমার ঘরে যে কাঠেব সিন্দুক আছে, তাতে সোনাব গয়না। আর রুপাব বাসনকোসন পাবে। সবচেয়ে বডো চাবিটা সিন্দুকের তালাব। মন্দিবে ঠাকুবেবী আসনের পিছনে একটা ঘটিতে সতেরোটা মোহর আছে, ঘবে নিয়ে বেখো। এখানে বেশি দেরি না করে তোমরা কলকাতায় চলে যেয়ো। ঠাকুরেব জন্য ভেব না, আমি পুজাব ব্যবস্থা করব। হেরম্ব জিজ্ঞাসা কবল, আপনি যাচ্ছেন কোথায গ মালতী বলল, আনন্দকে বলে আমি তার বাবাকে খুঁজতে গেছি। আব্ব তোমার মাস্টােবমশান্য যদি কোনোদিন ফেবে তাকে বলো আমি গোঁসাই ঠাকুরেব আশ্রমে যাচ্ছি, দেখা করতে গেলে কুকুব মালতী হাটতে আবশুম্ভ কবল। বাগানোবা গেটের কাছে গিয়ে বলল, ঘরে যাও হেরম্ব। আব্ব শোনো, আনন্দকে তুমি বিযে কববে তো ? কবব । কোবো তাতে দোষ নেই। আনন্দ জন্মাবার আগেই আমাদের বৈরিগি মতে বিয়ে হয়েছিল, হেব্বস্ব-সাক্ষী আছে। একদিন কেমন খেয়াল হল, দশজন বৈষ্ণব ডেকে অনুষ্ঠানটা কবে ফেললাম। আনন্দকে তুমি যদি সমাজে দশজনের মধ্যে তুলে নিতে পাব, হেরম্ব- অন্ধকারে মালতী ব্যাকুল দৃষ্টিতে হেবম্বর মুখেব ভাব দেখবার চেষ্টা করল, —ভদ্রলোকের সংসৰ্গই আলাদা। হেরম্ব মৃদুস্বরে বলল, তাই, মালতী বউদি। ঘবে ফিরে গিয়ে হেব্বস্ব দেখল, আনন্দ বিছানায় উঠে বসে আছে। হেরম্বস বসল। তোমার মা মাস্টােবমশায়কে খুঁজতে গেছেন, আনন্দ। আনন্দ বলল, জানি। তুমি জেগে ছিলে নাকি ? এ বাডিতে মানুষ ঘুমোতে পারে? এ তো পাগলা-গারিদ। আনন্দেব কথার সুরে হেরম্ব বিস্মিত হল। সে ভেবেছিল মালতী চলে গেছে শুনলে আনন্দ একটু কঁদবে । মালতীকে এত রাত্রে এ ভাবে চলে যেতে দেওযার জন্য তাকে সহজে ক্ষমা করবে: না। কিন্তু আনন্দের চোখে সে জলের আভাসটুকু দেখ৩ে পেল না। বরং মনে হল কোমল উপাধানে মাথা রেখে ওর যে দুটি চোখের এখন নিদ্রায় নিমীলিত হয়ে থাকার কথা, তাতে একটা অস্বাভাবিক দীপ্তি দেখা দিয়েছে। হেরম্ব বলল, আমি আটকাবার কত চেষ্টা করলাম, সঙ্গে যেতে চাইলাম কোন ভোলাচ্ছ আমাকে আমি সব জানি । আমিও উঠে গিয়েছিলাম। হেরম্ব আনন্দের দিকে তাকাতে পারল না, আনন্দকে একটু মমতা জানাবার সাধও সে চেপে