পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৫১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOKS. in (S. O পত্রিকার পাঠ সুপ্রিয়ার সেই হাতে ভর দিযে শিথিল বসবার ভঙ্গি মনে পড়ে। আসন্ন সন্ধায় সুপ্রিয়ার নিৰ্ব্বাক গৃহপ্ৰবেশের পর অন্ধকাব পথে দাঁডিয়ে তাব অস্তবের অমৃত-পিপাসাকে ছাপিয়ে যে কোটি ক্ষুধিত কামনার হাহাকাব্য উঠেছিল, মাটিব মানুষ হেরম্বকে এখনো তা আচ্ছন্ন করে রেখেছে। નૃ ૧88 অঙ্গনে বিছানো একটুকরো বোদ। আর তরুতলের ক্ষীণ ছায়াব সন্ধান পাওয়া যেত না। সুপ্রিয়াকে মনে করতে হলে সেই মন নিযে হোিবশ্বকে সহবোৰ ধূলিভবা পথে পথে বেড়াতে হত। পৃ ৭৪৬ কিন্তু এবারও আনন্দের নােচ হঠাৎ থেমে গেল। সে থমকে দাঁড়িয়ে পড়ল। তাবপবী টলে পড়ে গেল। হেরম্ব যখন তাকে তুলে সবিযে আনিল আগুনের তাপে তাব চুল অল্প অল্প ঝলসে গিয়েছে। আনন্দ আর্তনাদ করে উঠল, “জ্বলে গেলাম, ছেড়ে দাও আমাকে।” সবলে হেবম্বেব হাত থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিয়ে সে উদ্ধশ্বাসে ছুটে দবাজা খুলে বাইবে চলে গেল। বাগানেও সে দাঁড়াল না। বাগানের সামনেব। বাস্তা অতিক্রম করে খোলা মাঠেব উপব দিযে সমুদ্রের দিকে ছুটে চলল। হেরম্ব ছুটতে ছুটতে বললে, “কোথায় যােচ্ছ আনন্দ ?” আনন্দ ছুটতে ছুটতে জবাল দিলে, “আমার শরীর জ্বলে যাচ্ছে, সমুদ্রে স্নান করব।” ‘ফিরে এস আনন্দ। পুকুবে স্নান করবে। ঘবেব মেঝেতে জল ঢেলে তোমাব জন্যে আমি, পুকুব তৈবী কবে দেব। ফিবে এস।” আনন্দ দাঁডাল না। —“আমি সমুদ্রেই স্নান কৰব।’ ‘দাঁড়াও, আমিও আসছি আনন্দ। অত জোবে ছুটি না।” কিন্তু আনন্দ সাড়াও দিল না, দাঁড়ালও না। হেব্বস্ব অক্ষম। সবদিক দিয়ে অক্ষম। দৌড়েব প্রতিযোগিতাতেও আনন্দ যে তাকে হার মানাবে তা কে জানত? হেরম্বেব অনেক আগে নিজের হাল্কা শরীব নিয়ে আনন্দ সমুদ্রে বঁাপিয়ে পড়লে। সমুদ্র তেমনি কলািবব করছে। সমুদ্রেব ঢেউ তেমনিভাবে তীরে আছড়ে পড়ছে। বিকালে সুপ্রিযাব। কাছে বসে হেরম্ব যেমন কলরব শূনেছিল, যেমন ঢেউ দেখেছিল। ব্রেকার পার হয়ে যেখানে ঢেউ শুধু দোলায়, সেইখানে হেব্বস্ব আনন্দের নাগাল পেল। . “এমন করে পালিয়ে আসে? চল আনন্দ, এবার ফিরে যাই।” “তুমি ফিরে যাও। আমার ঘুম পাচ্ছে। কেন বিরক্ত করতে এলে ?” হেরম্ব আনন্দকে ধরবার চেষ্টা করল। আনন্দ ডুব দিয়ে তার হাত ছাড়িয়ে কোথায় যে আবার ভেসে উঠল। অন্ধকার উত্তাল সমুদ্রের বুকে হেরম্ব আর সন্ধান করে উঠতে পারল না | श्रृं ११२ মানিক রচনাসমগ্ৰ গ্ৰন্থখুঁত পাঠ সুপ্রিয়ার সেই হাতে ভর দিয়ে বসবার শিথিল ভঙ্গি মনে পড়ে। আসন্ন সন্ধ্যান্য সুপ্রিয়া স্মৃলিত পদে তার পরিত্যক্ত গৃহে প্রবেশ করার পর অন্ধকার পথে দাঁড়িযে তার অন্তবের অমৃত পিপাসাকে ছাপিয়ে যে কোটি ক্ষুধিত কামনাব হাহাকার উঠেছিল মাটিব মানুষ হেরম্বকে এখনও তা আচ্ছন্ন করে রেখেছে। মা রচনাসমগ্র ১, পৃ. ৩২৩ অঙ্গনে বিছানো একটুকরো বোদ। আর তরুতলের ক্ষীণ ছায়ার যোগাযোগ আগের মতো আলোছায়াব খেলা সাপ্তগ হয়ে যেত না। সুপ্রিয়াকে মনে করতে হবে সেই মন নিয়ে, হোিবশ্বকে শহবের ধূলিভরা পথে বেড়াতে হত। মা রচনাসমগ্র ১, পৃ. ৩২৫ কিন্তু এবারও অকস্মাৎ আনন্দেব নৃত্য থেমে গেল। আগুনের আবও নিকটে সে থমকে দাঁড়াল। আগুন। এখন তাৰ মাথা ছড়িয়ে আবও উচুতে উঠেছে, আনন্দকেও মনে হচ্ছে আগুনের শিখা। পবক্ষণে আনন্দ কান্ত হয়ে সেই বিপুল ব্যাপক যজ্ঞানলে ঢলে পডল। হেরম্ব নিশ্চল হয়ে তাকিযে রইল। কিছু কবাব নেই। আনন্দ অনেক আগে মারা গেছে। শুধু চিতায় উঠবাব শক্তিটুকুই তার বজায় ছিল। মা বচনাসমগ্র ১, পৃ. ৩৩২