পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৫২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOOKS. in GłR\e মানিক রচনাসমগ্ৰ অবিনাশ বলিল, “কাজটুকু সেরেই মাতাজীকে প্ৰণাম করতে যাচ্ছিলাম, ছােটঠাকুর -একেবারে অব্যর্থ ওষুদ দিয়েছেন । একেবারে অব্যৰ্থ' হেরম্বের দিকে চাহিয়া ‘জানেন দাদা, জানেন ?? রাত্রে বেঁী কি বললে জানেন ?” হেরম্ব হাসি চাপিয়া বলিল, “কি বললেন?" “বললে, আর তোমার মনে কষ্ট দেব না, আর কঁাদব না, তুমি যা বলবে শূন্যব। শুধু তাই নয় দাদা! মাপ চাইল ! বলল, আমায মাপ কর।” “বলল নাকি প: আশ্চৰ্য্য তো।” ‘প্রতায় হয় না মশায় সহজে! মাতাজীর মাদুলি—একেবারে অব্যৰ্থ। হাত জোর কবে কঁাদ কঁাদ হয়ে কি করেই যে বললে দাদা, আমি বডড অপরাধ করেছি, আমায় মাপ কর, শুনলে থ হয়ে যেতেন! নারী নতি স্বীকার করিয়াছে তাহারি। আনন্দে লোকটা ভরপুর!!! যেন ভয়ানক একটা কিছু কাণ্ড হইযাছে। বীে হাত জোর করিয়া মাপ চাহিয়াছে, স্বৰ্গ একেবারে হাতের মুঠায়! বেশী বয়সে বিবাহ করিলে লোকে হাস্যকর বকম স্ত্ৰৈণ হয়, সেই হীন মনোবৃত্তি ইহার। ভালবাসা ও স্নেহেব নামে নিজের বিকৃত পৌবুষের এ যে কি শ্ৰীহীন পরিচয় সে সংবাদ ইহারা রাখে না। খেলা নাই, হাসি নাই, জোবালো দাবী নাই, অল্পে বিদ্রোহ নাই, ব্যথা দিবার ও সহিবার ক্ষমতাব মধ্যে প্রেমকে মধুর করিবার ধৈর্য নাই, শুধু আছে। দাসত্ব! দুইটি নারী যেন স্বামীশ্ৰী হইয়াছে। একপক্ষ দযা করিয়া ভালবাসিলেই অপরপক্ষ আত্মহাবা । যাহাল দেহ,মন জয় কবিয না নিলে কিছুই পাওযা যায় না, তাহারি কাছে হাত পাতিয়া ভিক্ষা কবা। ভিক্ষাব্যাং নৈব্য লৈব চ। অতএব ক্ষমাপ্রার্থী স্ত্রীর গৰ্ব্বিত স্বামী অবিনাশের প্রতি হেবম্বেব কিছুমাত্র শ্রদ্ধাব উদয হইল না। এ যদি বলিত বর্ষণক্ষান্ত ভিজা আকাশে সূর্যোেব আলো ফুটিয়া ওঠার মত আমােব চুম্বনে বৌ এর চােখের জলে হাসি ফুটিয়াছিল, হেব্বস্ব খুন্সী হইত, ভাবিত, না, লোকটা নেহাৎ অপদার্থ নয়। পলস্পবেব হ্রদব্য জয় না কিবাটা। [ এক ] শ্রেণীর স্বামী স্ত্রীব গৰ্ব্বের বিষয। তা, সকলেব কি হৃদয থাকে ? আনন্দ বোধ হয় আজ পর্যন্ত ষ্টেসনের আপিসে ঢোকে নাই, তাব কত বিস্ময়া, কত প্রশ্ন। টেলিগ্রাফে কেমন করিযী সংবাদ আসে? সংবাদ যখন আসে অবিনাশ যদি তখন ঘুমাইয়া থাকে তাহা হইলে নিশ্চয় কলিশন হয় z তাহাব ঘুম ভাঙ্গাইয়া খবর না দিয়া আগেব ষ্টেসান হইতে গাড়ী ছাড়ে না? আশ্চর্য তো! আচ্ছা, টিকিট কোথায় ছাপা হয় ? টিকিট যদি ফুবাইযা যায? টিকিটে তারিখের ছাপ দিবার যন্ত্রটা আনন্দ বুঝি যা নিল। এত সহজ । অবিনাশ গকে আর বঁাচে না। যন্ত্রগুলি সেই যেন উদ্ভাবন কবিযাছে। "মর্স এব কোডগুলি, জনি ছােটঠাকুব, বডড কঠিন শেখা। কখ টখ কিছু নেই--শুধু ড্যস আব ডট , আবেক ক্টেসনে ডান্স আব ডট দিচ্ছে, আমি শুনে লিখে যাচ্ছি, ব্যস। ” ফিরিবার পথে হেরম্ব বলিল, “বলে গেলেই হল। কিছু জানে না লোকটা। কি হয় জানি” টেলিগ্রাফের তার দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ বয়, ওই যে যন্ত্র দেখলে টিকটিক কবছিল ? --ওবা সঙ্গে বিদ্যুতেব তারেল যোগ 可7豆一” রোদের তেজ বাড়িযাছে। কিন্তু মাতাজীর কাছে লোকের ভীড কমে নাই। হেরম্ব ঝবনায় গিয়া স্নান করিষা আসিল। আনন্দ সপেগ গেল। কিন্তু স্নান করিল না। “আমি শেযরাত্রে স্নান করেছি।” ‘অন্তরাত্রে শুয়ে শেষরাত্রে উঠেছিলে ?” “সন্ন্যাসীর চাবটের সময় উঠতে হয়।” “ঝরনায় এসেছিলে ?” 'না, তাবুর মধ্যে। বাত্রে গ্রামেব লোক জল দিয়ে গিয়েছিল।” হেরম্ব সমস্যায় পডিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “কিসে জল দিয়ে গেল?” ‘কেন, আমাদের বড় বড় দুটাে বালতি আছে, দ্যাখেন নি?” বড় বড় দুটা বালতি আবার সম্পত্তি! ঝরনার স্রোতের মধ্যে বসিয়া মাথায় জল দিয়া দিয়া হেরম্বেব মাথা ঠাণ্ড হইয়াছিল, আনন্দের জন্য টানটা আবার সতেজ হইয়াছে। ‘বালতির জলে কি ভাল স্নান হয় আনন্দ ?” “মার সঙ্গে আবার স্নান করব যে ।