পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOKS. in (? ど) মানিক রচনাসমগ্র তিনি যখন আসবেন খাবেন এখন, তুই বরং আদর করে খাইয়ে দিস, এখন নিজে খেয়ে আমায় বেহাই (Wf (V5 || বকুল কিছুতে খাইবে না, শ্যামারও জিদ চাপিয়া গেল সেও খাওয়াবেই। পিঠে জোরে দুটা চড মারিয়া কোনো ফল হইল না, বকুল একটু কঁাদিল না পর্যন্ত। আরও জোরে মারিলে কী হইত বলা যায় না, কিন্তু যতই হােক শ্যামার তো মায়ের মন, কতবার কত জোরে আর মায়ের মন লইয়া মেয়েকে মারা যায়? এক খাবলী পায়েস তুলিয়া শ্যামা মেয়ের মুখে গুজিয়া দিতে গেল, বকুল দাঁত কামড়াইয়া রহিল, তার মুখ শুধু মাখা হইয়া গেল পায়েসে। হার মানিয়া শ্যামা অভিমানাহত কণ্ঠে বলিল, উঃ কী জিদ মেয়ের ! কিছুতে পাবলাম না খাওয়াতে ? দুটাের আগে শীতল সত্যসত্যই ফিবিয়া আসিল। শ্যামা আসন পাতিয়া গেলাসে জল ভবিয়া দিল। ভাবিল শীতল খাইতে বসিলে সবিস্তাবে বকুলের জিদের গল্প করিবে। কিন্তু ঘবেব মধ্যে বাপ-বেটিতে কী পরামর্শই যে দুজনে তাহারা করিল, খানিক পবে মেয়ের হাত ধরিযা শীতল বাডির বাহির হইয়া গেল। যাওযার আগে শ্যামার সঙ্গে তাহদের যে কথা হইল। তাহা এই শ্যামা বলিল, কোথায় যােচ্ছ শুনি ? শ্যামা বলিল, পায়েস খেয়ে যাও। বকুল বলিল, তোমার পায়েস আমরা খাইনে। শ্যামা বলিল, দ্যাখো, ভালো করছ না। কিন্তু তুমি। আদর দিযে দিয়ে মেয়েব তো মাথা খেলে। এর জবাবে শীতল বা বকুল কেহই কিছু বলিল না। পা দিয়া পায়েসের বাটি উঠানে ষ্টুডিযা क्रिशा भोश (शाब्लिकन कॅप्रिंशीं । রাত প্ৰায নটার সময় দুজনে ফিরিয়া আসিল। বকুলের গায়ে নতুন জামা, পরনে নতুন কাপড দু। হাত বোঝাই খেলনা, আনন্দে বকুল প্রায় পাগল। আজ কিছুক্ষণের জন্য সকলের সঙেগই সে ভাব করিল, শ্যামার অপরাধও মনে রাখিল না, মহোৎসাহে সকলকে সে তাহার সম্পত্তি দেখাইল, বাবাব সঙ্গে কোথায় কোথায় গিয়াছিল গলগল করিয়া বলিয়া গেল। শীতল উৎসাহ দিয়া বলিল, কী খেয়েছিস বললি না বুকু ? পরদিন বাত্রে প্রেস হইতে ফিরিয়া বকুলকে শীতল দেখিতে পাইল না। শ্যামা বলিল, মামার সঙ্গে সে বনগাঁয়ে পিসিব কাছে বেড়াইতে গিয়াছে। আমায় না বলে পাঠালে কেন ? বললে কি আর তুমি যেতে দিতে? যাবার জন্য কঁদোকাটা করতে লাগল, তাই পাঠিয়ে দিলাম। হঠাৎ বনগা যাবার জনা ও কাদাকাটা করল কেন ? কাল-পরশু ফিরে আসবে। ঝোঁকেব। মাথায় কাজটা করিয়া ফেলিয়া শ্যামাব বড়ো ভয। আব অনুতাপ হইতেছিল, সে আবার বলিল, পাঠিয়ে অন্যায় করেছি। আর করব না। শীতলের কাছে ক্রুটি স্বীকার করিতে আজকাল শ্যামার এমন বাধোবাধো ঠেকে ! নিজে চারিদিকে সব ব্যবস্থা করিয়া করিয়া স্বভাবটা কেমন বিগড়াইয়া গিয়াছে, কোনো বিষয়ে কারও কাছে যেন আর নত হওয়া যায় না। আর বকুলকে এমনভাবে হঠাৎ বনগাঁয়ে পাঠাইয়াও দিয়াছে তো এই কারণে, মেয়ের উপর অধিকার জাহির করিতে। কাজটা যে বাড়াবাড়ি হইয়া গিয়াছে ওরা রওনা হইয়া যাওয়ার পরেই শ্যামার তাহা খেয়াল হইয়াছে।