পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/১৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 ዒbr মানিক রচনাসমগ্র খানিক পরে সোহাগীই জল এনে দেয় টিনের মগে। এক ঘটি জল যে চেয়েছিল। গগন সেটা নিছক অভ্যাস, ঘটি গেছে অনেকদিন আগেই। যাবার জন্য গগন পা বাড়িয়েছে, সোহাগী বলে, ভাত নিয়া যামুনে। পাবি কই ? পামু। চাল জোগার করুম। মার খেতে খেতে যে ভাবে সোহাগী বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল যে শুধু চুরি করে স্বামীর ভাগের ভাত খাওয়া নয়, ভাত না জুটলে গগনকেই দা দিযে কোিট ব্যানুন রোধে খাবে তেমনই বিদ্রোহের ভঙ্গিতে সে ঘোষণা করে, চুরি কইরা পারি ডাকাতি কইরা পারি চাল জোগার করুম। নদীগো ঘরে কঁাড়ি কঁাড়ি চাল দিব না। মাথা নাড়ে গগন । দিব না ? না দিলে খুন করুম, দাও দিয়া গলা কাটুম। আমগাছটার পাশ দিয়ে রোদ পড়েছে। শীর্ণ ক্লিষ্ট মুখে, কী যেন জুলজুলে সে মুখেই, কীসের পণ। শেষরাত্ৰে কঁাপিয়েছিল, শীত এখন মিঠে। নতুন করে আজ একবাব মুগ্ধ হয়। গগন নতুনভাবে তার বউয়ের চোখে চোখে চেয়ে। এদিক ওদিক থেকে সাড়া মিলছে মানুষের, রোগা গোরুটিব গলার দড়ি ধরে নিয়ে যেতে যেতে দাঁড়িয়েছে কাটু সেখের বউ গোবুটিকে পথে-পড়া নতুন খড় মুখে তুলে নেবার সুযোগ দিতে, তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। আস্তে আস্তে আবার ঘরে ঢুকে গগন ডাকে, শূইনা যাও। সোহাগী কাছে এলে তার একখানা হাত ধরে গগন, জন্ম জন্মেব দোষ ত্রুটি অপবাধ পাপেব জন্য মার্জনা চাওয়ার মতো এক অদ্ভুত আবেগের সঙ্গে বলে, শোনো তোমারে কই। আব্ব মারুম না ! গায়ে তোমার হাত দিমু না যা কর তুমি, কোনোদিন যদি তাঁর গায়ে হাত তুলি সোহাগী