Str8 মানিক রচনাসমগ্র দেয়, পরস্পরকে ছোটাে করে। তবে গুরু গুরুই, গাল দিতে হলেও তাকে প্ৰণাম জানিয়েই গাল দিতে হবে ! গানের শূরুতে নরহরি প্রণাম জানাল ছড়ায় হাতে ধরে গান শেখালে, গুরু, তুমি বাপ, গুরুমারা বিদ্যা দেখে দিয়ে না। অভিশাপ ! দুটি পায়ে প্ৰণাম জানাই, যে গুরু সে বাপ। কবিগানের মন্থরগতি, ধীরে ধীৰে নানা আঁকাবঁকা পথে নানা বিপথে নানা বাহুল্য বৈচিত্ৰ্য সংগ্ৰহ করতে করতে এগিয়ে চলে, আস্তে আস্তে আসর। জমে। নরহরি প্রথমে আরম্ভ করে দুদিন ঘনিয়ে আসার গান-মনে মনে রাজেন বলে, চোর । গুরুমারা বিদ্যাই শিখেছি বটে তুমি ! দুঃখের দিনের ছবি ভয়াবহ হয়ে উঠতে না উঠতে পাশ কাটিয়ে নরহরি গায় : কোমর বাঁধো ভাই ! একটু থাতোমতো খেয়ে ভুবু কুঁচকে চেয়ে থাকে রাজেন। করুণ হয়ে ওঠে নরহরির মরণের গান, হ্রদয়ে মোচড় দেয় তার রসালো, ঝাঁঝালো পদগুলি, কিন্তু চোখে জল আনে না, কঁদোয় না। অসহায় হতাশায় ফেটে যাবার উপক্ৰম কবে না বুক। ক্ৰোধে, ক্ষোভে তপ্ত হয়ে ওঠে নিশ্বাস, হাতগুলি যেন এগিয়ে যেতে চায় নরহরির ডাকেই সায় দিযে শিশুখেকো মেয়েখেকো মানুষখেকো রাক্ষসগুলির টুটি ধরে টেনে এনে ফাঁসি লটকে দিতে।-- ছাড়ো মিছে। আশ। রাজার সেপাই দেয় কীরে ভাই ( মুখে ) তুলে ভাতের গ্রাস বারংবার উন্মাদনা ফেটে পড়ে সভায়। মুখ টানটান। চোখে চোখে আগুনেবা ঝিলিক। সহকারীকে সুর ধরিয়ে দম নিতে বসতে যাবে নরহরি, রাজেন তাকে জড়িয়ে ধরে বুকে। বলে, নরহরি তুই মোর গুরু ! তোকে প্ৰণাম করি । তুই মোর গুরু ! হাত বাজিয়ে সে পা ছুতে যায় নরহরির। নরহরি ঠেকিয়ে রাখে। ওরে বাপ রে, অপরাধ হবে, পা দুয়ো না বাপ। মরে যাব ! তবে বল মোর মেয়াকে লিবি ! তোকে ছাড়া আর কারও হাতে মেয়া দেব না ! দু আঙুল কানে ঢুকিয়ে নরহরি বলে, বোলো না বাপ। শুনতে নাই তোমার মেয়া আমাব বুন !