পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খতিয়ান პა (* এই তো দোষ তোমার ! রসিক বলে, আপশোশের সুরে, কিন্তু বেশি চটে না গিয়ে, সেটা আরও আশ্চর্য করে দেয়। অজিতকে ! বিষয়ের গুরুত্ব বোঝে না তুমি। কথাটা হল কী, তুমি বরাবব অসিত সুজিতের সমান সংসাব খরচ দিয়ে এসেছি। ওদের ডবল দেওযা উচিত ছিল। যাকগে, আসিতের মেয়ের বিয়ের ভাবনা আছে, সুজিতের বউটী নিত্য রোগী, এক মেযে বিয়োতে ওর হাজার টাকা খরচ-ভবিষ্যতে কী যে কববে। ভগবান জানেন । আমি বলি কী, ওদের সঙ্গে তোমাব কোনো মিল নেই, ওরা এক রকম, তুমি অন্য বকম। কী দবকাব তোমাদেব একসাথে থাকবার ? আমার জন্যে আমার ভযে একসাথে থেকেছে, নযতো কবে তোমায ওবা ভিন্ন কবে দিত। এ অবস্থায, আমার মতে, তোমার ভিন্ন হওয়া উচিত। ওই বাড়তি ভাড়ার ঘরটা তুমি রান্নাঘর করতে পাব-কাল থেকে তাই হবে। কাল পয়লা না ? হাঁ্যা, কালকেই পাযলা। বেশ তো তাই হবে। অজিতের সংক্ষিপ্ত গা ছাড়া জবাব বডোই ক্ষুন্ন কবে বসিককে। একবার ভাবলে না, বউমাব সঙ্গে পবামর্শ কবলে না, বলে বসলে, তাই হবে ? তোমার এই মতিগতির জন্য উদাসীন ভাবটা ত্যাগ করবে। এবােব অজিত জোব দিযে বঁটাঝোিব সঙ্গে বলে, সংসাবের ব্যবস্থায় আমাৰ মতিগতিব প্রশ্ন কী ? আমি কিছু করতে গেলে বলতে গেলেই আপনিও বাগ কবেন, আপনাব বউমাও খেপে যান। আপনাবা পবামর্শ কবে যা ভালো বোঝেন তাই কবুন। একি একটা কথা হল অজিত ? বসিক বলে কাতিবভাবে, তোমাব দুশোর ওপব আয় বেডেছে শুনে থেকে ভাবছি। এবাব নিজেব পায়ে দাঁড়াতে পারবে। এদিকে সুজিতেব চাকবিটাও গেল। অনেক আগেই তোমায ভিন্ন হতে বলা বোধ হয উচিত ছিল, ভুল কবেছি মনে হয়। লেখাপড়া শিখলে না, মানুষ হলে না, ভেবেছিলাম ভাইদেব সঙ্গে থাকলে সমযে অসমযে তবু কুঁচকানিতে। বউমাও যেন কেমন। ওবা পছন্দ করে না, আমল দেয না, তবু বেহায়ার মতো লেপ্টে থাকবেন। নাঃ, কাল থেকেই তুমি ভিন্ন হযে যাও। তাই হবে। কাল থেকে ভিন্ন বান্নাঘবে ভিন্নভাবে লক্ষ্মী তাব আব্ব খোকাব্য জন্য সান্না কববে, এটা তাব কাছে অতি সামান্য ব্যাপার। বাডিতে সে একবেলা খায়। দশজনেব সঙ্গে মিলেমিশে খাওযা তাব অভ্যাস। সেটা বাইরে হােটেলে সম্ভব হয, বাড়িতে ভাইরা তার সঙ্গে খায না। সমযমতো দু-একদিন হঠাৎ হাজিব হয়ে আসন পেতে সবার সাথে খেতে বসে গিয়ে সে দেখেছে, খাওয়া যেন মাটি হযে গোল ভাইদের, পরিবেশন উদ্ভট হযে গেল মেযেদের, লক্ষ্মীব পর্যন্ত ! পরে লক্ষ্মী ঘবে গিযে কেঁদে বলেছে, কেন তুমি বসতে গেলে ওনাদেব সঙ্গে ? আমি গলায় দড়ি দেব । দশ-বিশ হাত ব্যবধান সৃষ্টির চেষ্টাটা সুষম এমন কুৎসি ভাবে কবে যেন গুন্ডার হাতে মান বাঁচাতে ভদ্রমেয়ে সতী বউ ইটের কবর চাইছে। আবাব চাকরি গেছে সুজিতের। সুমনার স্নায়ুগত ব্যারামটা মাসখানেক হল আবার বেড়ে গেছে শুনেছিল লক্ষ্মীর কাছে, বোধ হয় মাসখানেক সুজিতের চাকরির মেয়াদ আছে এটা টের পাওয়ার পর। আগের বার যখন বেকার ছিল সুজিত, সুমনাকে দিয়ে সে মাঝে মাঝে টাকা চেয়ে পাঠাত তার কাছে। পাঠাত লক্ষ্মীর কাছেই কিন্তু সুমনা টাকার দরকারটা জানাত