9ܔ মাঝখানে কিছুদিন সে আসেনি। শুভময়ীর মরণ আব্ব নিজের চিন্তা নিয়েই ব্যস্ত হয়েছিল। কিন্তু সেই অল্প সময়ের মধ্যে তার অজ্ঞাতসারেই তার সঙ্গে এ বাড়ির মানুষগুলির সম্পর্কে যে বেশ খানিকটা পরিবর্তন ঘটে গেছে আজ সেটা পরিষ্কার বোঝা যায়। ছেলেবেলা থেকে যে কেদার অসংখ্যবার এসেছে গিয়েছে খেলাধুলো উৎপাত করেছে ঠিক সেই কেদার যেন আজ আসেনি,-তাকে আজ একটু অন্যভাবে নতুনভাবে অভ্যর্থনা করা দরকার, একটু বেশি খাতির করা দরকার, বুঝিয়ে দেওয়া দরকার যে আগের অনেকবারের চেযে তার আজকের আসাটা অনেক বেশি খুশির ব্যাপার। সকলের কাছে ! কেউ জানত না যে সে এখন আসবে। জ্যোতি তাকে বিনা নোটিশে আচমকা ডেকে এনেছে। छिब्ल তবু মনে হয় তাকে বিশেষভাবে খাতির করার জন্য সকলে যেন বিশেষভাবে প্রস্তুত হয়েই কৃতির মা মােহিনী বলে তােমার আরও কী হয়ে বাবা খাওয়াদাওয়া কতাে হচ্ছে আবার নিজেই আপশোশ করে বলে, আর কেই বা করবে। প্রাণ দিয়ে। যত্ন করার মানুষটাই চলে গেল। পরিমলের দিকে ফিরেও তাকায় না মোহিনী। প্রসাধন অসমাপ্ত রেখেই আসে জ্যোতির দিদি প্রীতি। সেও ফিরে তাকায় না পরিমলের দিকে। কেদারকে সস্নেহ অনুযোগ জানিযে বলে, ভুলে গেছ নাকি আমাদের ? একেবারে খোঁজখবর নাও না ? জ্যোতি বুঝি ধরে নিয়ে এল জোর কবে ? তারপর নিজেই ভারিকি সুরে বলে, তা কাজকর্ম দায়িত্ব পড়ছে বইকী। সেটা বুঝিনে ভেব না। ऊर्छ। হৰ্ষের দুটি ছেলে। একটি ছিল সবার বড়ো, অন্যটি কনিষ্ঠ। বড়ো ছেলেটি মারা গেছে সাত-আটবছর আগে । তার বিধবা বউ রেবা এসে পরিমলকে বাদ দিয়ে কেদারকে বলে, গরম গরম লুচি ভেজে দিই, তারপরে চা খেয়ো। কী কষ্টে যে একটু ময়দা জোগাড় হয়েছে। আবার কবে পাওয়া যাবে কে জানে ? নির্বিকার অবহেলার ভঙ্গিতে জ্যোতি একটু বাঁকা হয়ে ; সালে কঁধ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। মুখে তার মৃদু মৃদু ব্যঙ্গের হাসি। এ সব যেন তার নিজেরই রসিকতা, অবজ্ঞা ভরা আনন্দে সে ব্যাপারটা উপভোগ কবছে। দিঘল সে মানানসই। তাই, বাইশ বছর বয়সটা তার দেহে হঠাৎ খুব বেশি স্পষ্ট হয়ে চােখে পড়ে না। এইরকম কোনো একটা ভঙ্গি করে দাঁড়ালে তখন নিথর তরঙ্গের মতো স্পষ্ট রূপ নেয়। বোনের দিকে তাকায় শ্ৰীতি। ভঙ্গিটা তাকে যেন সুখীই করে। পরিমল জ্যোতির দিকে চেয়ে আছে দেখে বিরক্তির ভুকুটি করে শ্ৰীতি। এই নগ্ন কুৎসিত সমাদর, এই নােংরা খাতির অসহ্য হয়ে উঠত কেদারের, গায়ে তার জ্বালা ধরে যেত।--এদের সঙ্গে পরিচয়টা যদি একg কম ঘনিষ্ঠ হত তার। নিজের বাড়ির লোকের মতোই এদের কারও সম্পর্কে তার কিছুই অজানা নেই। আচমকা আজ এদের এই খাপছাড়া ব্যবহারের গুরুত্ব সে টের পায়। সবটা না ধরতে পারলেও খানিকটা অনুমান করে নিতে পারে এর পিছনের আসল বাস্তবতা। এই নগ্ন আক্রমণ শুধুই তার মন ভুলাবার চেষ্টা নয়, তা হলে পরিমলের সামনে এ অবস্থায় এ ভাবে কখনই আত্মপ্রকাশ করত না-জ্যোতি তাকে আজ হঠাৎ চা খেতে ডেকে আনবে এ