পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র সপ্তম খণ্ড.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ver মানিক রচনাসমগ্ৰ কাজ করতেন। এ বছর ছাঁটাই হয়ে ঘরে বসে আছেন। সে নিজেই যেন দায়ি এমনি ভাবে অণিমা যোগ দেয়, যে দিনকাল। মানুষের কাজকর্মও থাকছে R | অণিমাকে দেখলে মনে হয় যৌবনের মধ্যাহ্ন পার হয়ে গেলেও সবেমাত্র পার হয়েছে। এখনও সীমানায় পৌঁছতে দেরি আছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে অপরাহু এসে গিয়েছে তার যৌবনের, ঘনিয়ে আসছে। ছায়াচ্ছন্ন সন্ধ্যা । তার বয়স কম দেখাবার প্রাণপণ চেষ্টার যে মানেই অন্য লোকে কবুক, কেদাবি জানে এ শুধু তার পেশা বজায় রেখে চলার প্রয়োজনকে খাতির করা। আপনার ছেলেমেয়ে নেই ? একটি মেয়ে। আচ্ছা, আপনার সংসারের কাজ রান্নাবান্না এ সব কে করে ? লোক রেখেছেন ? লোক কী রাখা যায় কেদারবাবু! ওনার যখন চাকরি ছিল তখনই পারতাম না, আজ কোথেকে পারব ? বাড়ি থাকলে সে বেলা আমি রাধি। অন্য বেলা উনি চালিয়ে দেন। কেদারের সঙ্গে অল্পদিনের পরিচয় হলেও তার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে তার আগ্রহ ও প্রশ্নের সঙ্গে অণিমার অনেককালের পরিচয়। কেদারের মতো এমন কত তরুণ ডাক্তারকে সে এই রোগজীর্ণ নিপীড়িত মানবতার মুক্তিদাতা হয়ে কর্মজীবনে নামার অনুপ্রেরণায ডগমগ হযে থাকতে দেখেছে। এমনি সংগ্রহে তাদের কত প্রশ্ন করতে শুনেছে চিকিৎসকদের সহকর্মিণী নার্সদের ব্যক্তিগত छैोदन अन्त्र्टुर्नू ! কয়েক বছর পরে এরাই আবার জীবনে একটিমাত্র আদর্শ খাড়া রাখে সামনে, বেগী বাড়ুক, পসার বাড়ুক, ফি বাড়ুক। ক্ষমতা হাতে পেলে এরাই নিষ্ঠুর অবিবেচনার সঙ্গে নার্সদের কাছে দাবি কবে নিখুঁত দায়িত্বজ্ঞান সময়জ্ঞান তৎপরতা। কেউ কেউ অন্য দাবিও কবে। 8 পরিমলের গরদের পাঞ্জাবি, গরদের চাদর, তীতের ধুতি, তার ওষুধের দোকানে দামি আসবাব, নতুন সুদৃশ্য সাইনবোর্ড-এ সব সত্যই তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো ব্যাপার ! বাইরের লোকের কাছে না হােক, যারা তার ও তার বাড়ির অবস্থা জানে তাদের কাছে তো বটেই। হঠাৎ এত পয়সা সে পেল কোথায় ? কোনোরকমে পুরানো একটা চেয়ার টেবিল, ফরাশ পাতা তক্তপোশ এবং ভাঙা একটা আলমারি নিয়ে দোকান খোলা, হঠাৎ সব এ ভাবে বদলে দেবার সঙ্গতি সে জোটালো কী করে ? বিয়ে তো করেনি বা বিয়ের সব ঠিক হয়ে যাওয়ায় আগাম কিছু পণ তো আদায় করেনি ভাবী শ্বশুরের কাছে ! পরিমলের বেশ ও দোকানের বাহ্য পরিবর্তনের সঙ্গে জ্যোতিরও একটা আশ্চর্য পরিবর্তন ঘটেছে দেখা যায়।