পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র সপ্তম খণ্ড.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〔冲啡 Nebo নারীপুরুষ নির্বিচারে এই নিয়ম। কত সোজা কথাটা ! অবাস্তব প্রেমের মূল্য কতটুকু ! সেই প্রেমের দামে সস্তা মানুষ ছাড়া কে নিজেকে বিলিয়ে দেবে ! জ্যোতি তার মুখের ভাব লক্ষ করছিল। একটা নিশ্বাস ফেলে সে বলে, এখনও আসল কথায় আসিনি কেদারদা। এতক্ষণ তো শুধু কীসে কী হয়েছে বললাম। अमल कथां की ? আমায় বলছে বাবাকে ধরে ব্যবস্থা করে দিতে। আরও কিছু টাকা পেলে গুছিয়ে নিতে পারবে। কোন মুখে বাবাকে আবার বলব বলো তো ? হর্ষকাকার টাকা কই ? রোগীও কমিয়ে দিয়েছেন-ডাকলে যান না। মুশকিল কী হয়েছে জানো ? আমি বললে বাবা দেবে-যেভাবে পারে জোগাড় করবে। ও মানুষটাও তা জানে। মনে মনে কী বলছে বুঝতে পারি। এই বুঝি তোমার ভালোবাসা, আমার জন্য এটুকু করতে পারবে না ? আমি কোন মুখে বলব সেটা ভাবে না। কত হস্থিতম্বি করেছি, কবিরাজ কী মানুষ নয়, আমায় সুখে রাখতে পারবে না ? আজ গিয়ে উলটাে গাইতে পারি। আমি ? এই নিয়ে ঝগড়া হয়েছে ? না। ঝগড়া ঠিক নয়। আমি যা বলছি ঠিক তার উলটোটা করছে। সর্বদা বিরক্ত ভাব, যখন তখন সন্মান্য ব্যাপারে চটে যাচ্ছে। তবে আসল কারণ ওটা। কেদার ভেবেচিন্তে বলে, হর্ষকাকাকে বলবি তাছাড়া উপায় কী ? কেদার শুধু জ্যোতির দিকে হিসেব করে না, হর্ষের কথাও ভাবে। ঘর সংসার সম্পর্কে হর্ষের উদাসীনতা বাড়ছে, আদুরে মেয়ের জন্য টাকা জোগাড়ের চেষ্টা করতে গিয়ে এ ভাবটা যদি কেটে যায় ! জ্যোতি বলে, আমি পারব না। কিন্তুকিন্তু জানি না। আমি মরে গেলেও বাবাকে বলতে পারব না। সেই তেজি জ্যোতি ! তেজ তার এখনও যায়নি ! কেদার হঠাৎ জিজ্ঞাসা করে, তুই আবার মাছটাছ খাওয়"। ধরেছিস ? R | যত রকম বাড়াবাড়ি আরম্ভ করেছিলি সব বজায় রেখেছিস ? সব । কেদার একটু ভেবে বলে, তোর ইচ্ছা আমি হৰ্ষকাকাকে বলি ? জ্যোতি চুপ করে থাকে। আমি পারব না জ্যোতি । আমিও তাই ভাবছিলাম। এ কী মানুষ পারে ? বাড়ি ফিরে বাইরের ঘরেই একটু বসে কেদাব। মনটা একটু গুছিয়ে ব্যাগ নিয়ে ডিসপেনসারিতে যাবে। ভেতরের বারান্দায় মেয়েদের গল্প হচ্ছে শুনতে পায়। মায়া আর তার মা নীচে এসেছে। মোহিনী বলে, এমন বউ জুটেছে বলব কী তোমাকে। একলাটি গটগট করে বাপের বাড়ি চলে গেল। সধবা মানুষ, মাছ খাবে না। যতদিন পরিমল বাড়িতে মাছ আসতেই দিত না, কেউ খেত না, তখন না খেয়েছিস আলাদা কথা। পরিমল আবার মাছ ধরেছে, কিন্তু বউয়ের ধনুক-ভাঙা পণ। একবার যখন ছেড়েছে আর ধরবে না।