পাতা:মানিনী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মানিনী।
১১

কি ভাবিয়া রজনীকান্তের মনিব সেই কর্ম্মে বিপিনকে নিযুক্ত করিলেন।

 চাকরী হইবার পরও বিপিন আপনার ভ্রাতা রজনীকান্তের সহিত পূর্ব্বের মত একত্র বাস করিতে লাগিলেন। রজনীকান্ত মনে করিলেন যে, এখন দুই ভ্রাতার উপার্জ্জিত অর্থ হইতে সাংসারিক খরচ পত্র বাদে যাহা কিছু বাঁচাইতে পারিবেন, তাহার দ্বারা পূর্ব্ব ঋণ সকল প্রথমে পরিষ্কার করিয়া পরিশেষে বিপিনের বিবাহের বন্দোবস্ত করিবেন। রজনীকান্ত মনে যাহা ভাবিয়াছিলেন, কার্য্যে কিন্তু তাহা ঘটিল না। বিপিন আপনার বেতন হইতে একটিমাত্র পয়সা দিয়াও সংসারের সাহায্য করিলেন না। এইরূপে দুই মাস গত হইয়া গেলে, এক দিবস রজনীকান্ত খরচের নিমিত্ত বিপিনকে কহিলেন। উত্তরে বিপিন কহিলেন, “আমি যে সামান্য বেতন পাই, তাহাতে আমি নিজের খরচই কুলাইয়া উঠাইতে পারি না—সংসারের সাহায্য করিব কি প্রকারে?”

 বিপিনের কথা শুনিয়া রজনীকান্ত মর্ম্মাহত হইলেন, তথাপি তাঁহাকে আর কিছু না বলিয়া নিজের সাধ্যানুযায়ী সংসার খরচের সংস্থান করিতে লাগিলেন। কিন্তু ঋণের ভাগ ক্রমেই বর্দ্ধিত হইতে লাগিল।

 রজনীকান্ত মনে করিলেন যে, এই সময় বিপিনের বিবাহ দেওয়ার নিতান্ত অবশ্যক; নতুবা যে তাহার স্বোপার্জ্জিত অর্থ সকল এইরূপেই নষ্ট করিয়া ফেলিবে। এই ভাবিয়া রজনীকান্ত একটা বয়স্থা পাত্রীর অনুসন্ধান করিয়া বেড়াইতে লাগিলেন।