পাতা:মানিনী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
দারোগার দপ্তর, ১৬১ সংখ্যা।

তাঁহাকে কোন কথা বলিবার পূর্ব্বেই সে গাড়িবানকে গাড়ী হাঁকাইতে কহিল; সুতরাং কোন কথা বলিতেও পারিলাম না, অথচ গাড়ী হইতে অবতরণ করিতেও সমর্থ হইলাম না। গাড়ী কিয়দ্দূর গমন করিলে যখন দেখিলাম, গাড়ীর গতি ক্রমে কমিয়া আসিয়াছে, তখন আমি গাড়িবানকে কহিলাম, “গাড়ী থামাও।” গাড়ী থামিল। আমি তাঁহাকে আর কোন কথা না বলিয়া, গাড়ী হইতে অবতরণ করিলাম। গাড়ী পুনরায় চলিয়া গেল। কোথায় গেল, তাহা বলিতে পারি না। দেখিলাম, আমার সহিত তাহার এতদিবসের বন্ধুত্ব তিনি ভুলিয়া গিয়াছেন। আমি গাড়ী হইতে অবতরণ করিবার পর, তিনি একবার আমার দিকে দৃষ্টিপাতও করিলেন না, অবলীলাক্রমে চলিয়া গেলেন।

 ডাক্তার বাবুর কথা শ্রবণ করিয়া বিপিন আরও বিস্মিত হইলেন, এবং পুনরায় জিজ্ঞাসা করিলেন, “তবে কি আমার মানিনী কোন্ স্থানে গমন করিয়াছে, তাহা আপনি অবগত নহেন?”

 ডাক্তার বাবু কহিলেন, “না, তাহার কিছুই আমি অবগত নহি।”

 বিপিন সেইস্থানে বসিয়া পড়িলেন। ডাক্তার বাবু বিপিনকে সেইরূপ অবস্থায় সেই স্থানে পরিত্যাগ করিয়া, আপনার বাড়ীর ভিতর প্রবেশ করিলেন।

 এইরূপ অচেতন অবস্থায় কিয়ৎক্ষণ সেইস্থানে উপবেশন করিয়া বিপিন পরিশেষে নিতান্ত দুঃখিত অন্তঃকরণে আপন বাসা-অভিমুখে গমন করিলেন।

 রাত্রির অবশিষ্টাংশ মানিনীর চিন্তাতেই বিপিন অতিবাহিত করিলেন। যে ভাবনা তাঁহার অন্তঃকরণ হইতে সময়ের