পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৮
মানুষের ধর্ম্ম

মেনে নিয়ে মূঢ়তাকে, চিত্তের ও ব্যবহারের দীনতাকে, বিচিত্র আকারে প্রকাশ করতে বাধা পায় না। কিন্তু মানুষ হয়ে জন্মেচি, ললাটের লিখনে নিয়ে এসেচি সোঽহম্‌, এই বাণীকে সার্থক করবার জন্যেই আমরা মানুষ। আমাদের একজনেরও অগৌরব সকল মানুষের গৌরব ক্ষুণ্ণ করবে। যে সেই আপন অধিকারকে খর্ব্ব করে সে নিজের মধ্যে তাঁর অসম্মান করে যিনি

কর্ম্মাধ্যক্ষঃ সর্ব্বভুতাধিবাসঃ সাক্ষী

—যিনি সকলের কর্ম্মের অধ্যক্ষ, সকলের যিনি অন্তরতম সাক্ষী, সকলের মধ্যে যাঁর বাস।

 পূর্ব্বেই দেখিয়েচি অথর্ব্ববেদ বলেচেন মানুষ প্রত্যক্ষত যা পরমার্থত তার চেয়ে বেশি, সে আছে অসীম উদ্বৃত্তের মধ্যে। সেই উদ্বৃত্তেই মানুষের যা-কিছু শ্রেষ্ঠ, তার

ঋতং সত্যং তপো রাষ্ট্রং শ্রমো ধর্ম্মশ্চ কর্ম্ম চ।

স্থূল দ্রব্যময়ী এই পৃথিবী। তাকে বহুদূর অতিক্রম করে গেছে তার বায়ুমণ্ডল। সেই অদৃশ্য বায়ুলোকের ভিতর দিয়ে আসচে তার আলো, তার বর্ণচ্ছটা, বইচে তার প্রাণ, এরই উপর জমচে তার মেঘ, ঝরচে তার বারিধারা, এইখানকার প্রেরণাতেই তার অঙ্গে অঙ্গে রূপধারণ করচে পরম রহস্যময় সৌন্দর্য্য, এইখান থেকেই আসচে পৃথিবীর যা শ্রেষ্ঠ, পৃথিবীর শ্রী, পৃথিবীর প্রাণ। এই