অসীম উদ্বৃত্ত থেকে মানুষের মধ্যে যে শ্রেষ্ঠতা সঞ্চারিত হচ্চে সে কেবল সত্যং ঋতং নয়, তার সঙ্গে আছে রাষ্ট্রং শ্রমো ধর্ম্মশ্চ কর্ম্ম চ ভূতং ভবিষ্যৎ। এই যে-কর্ম্ম এই যে-শ্রম যা জীবিকার জন্যে নয় এর নিরন্তর উদ্যম কোন্ সত্যে? কিসের জোরে মানুষ প্রাণকে করচে তুচ্ছ, দুঃখকে করচে বরণ, অন্যায়ের দুর্দ্দান্ত প্রতাপকে উপেক্ষা করচে বিনা উপকরণে, বুক পেতে নিচ্চে অবিচারের দুঃসহ মৃত্যুশেল। তার কারণ, মানুষের মধ্যে শুধু কেবল তার প্রাণ নেই, আছে তার মহিমা। সকল প্রাণীর মধ্যে মানুষেরই মাথা তুলে বলবার অধিকার আছে সোঽহম্। সেই অধিকার জাতিবর্ণনির্ব্বিচারে সকল মানুষেরই। ক্ষিতিমোহনের অমূল্য সংগ্রহ থেকে বাউলের এই বাণী পাই—
জীবে জীবে চাইয়া দেখি সবই যে তার অবতার,
ও তুই নূতন লীলা কী দেখাবি যার নিত্য লীলা চমৎকার।
প্রতিদিনই মানবসমাজে এই লীলা। অসংখ্য মানুষ জ্ঞানে প্রেমে ত্যাগে নানা আকারেই অপরিমেয়কে প্রকাশ করচে। ইতিহাসে তাদের নাম ওঠে না, আপন প্রাণ থেকে মানুষের প্রাণপ্রবাহে তারা ঢেলে দিয়ে যায় তাঁরই অমিততেজ
যশ্চায়মস্মিন্ তেজোময়োঽমৃতময়ঃ পুরুষঃ সর্ব্বানুভুঃ