পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মানুষের ধর্ম্ম
৯৩

দিয়েচেন ঝঙ্কার, তাঁর প্রকাশের তপোদীপ্তি জ্বলে উঠেচে তমসঃ পরস্তাৎ। রব উঠেচে, শৃণ্বন্ত বিশ্বে শোনো বিশ্বজন তাঁর আহ্বান শোনো, যে-আহ্বানে ভয় যায় ছুটে, স্বার্থ হয় লজ্জিত, মৃত্যুঞ্জয় শৃঙ্গধ্বনি ক’রে ওঠেন মৃত্যুদুঃখবন্ধুর অমৃতের পথে।

 ভূমা থেকে উৎশিষ্ট যে-শ্রেষ্ঠতার কথা অথর্ব্ববেদ বলেচেন সে কোনো একটিমাত্র বিশেষ সিদ্ধিতে নয়। মানুষের সকল তপস্যাই তার মধ্যে, মানুষের বীর্য্যং লক্ষ্মীর্বলং সমস্ত তার অন্তর্গত। মনুষ্যত্বের বহুধা বৈচিত্র্যকে একটিমাত্র বিন্দুতে সংহত ক’রে নিশ্চল করলে হয় তো তার আত্মভোলা একটা আনন্দ আছে। কিন্তু ততঃ কিম, কী হবে সে আনন্দে। সে আনন্দকে বলব না শ্রেয়, বলব না চরম সত্য। সমস্ত মানব-সংসারে যতক্ষণ দুঃখ আছে অভাব আছে অপমান আছে ততক্ষণ কোনো একটিমাত্র মানুষ নিষ্কৃতি পেতে পারে না। একটিমাত্র প্রদীপ অন্ধকারে একটুমাত্র ছিদ্র করলে তাতে রাত্রির ক্ষয় হয় না, সমস্ত অন্ধকারের অপসারণে রাত্রির অবসান। সেই জন্যে মানুষের মুক্তি যে-মহাপুরুষেরা কামনা করেচেন তাঁদেরই বাণী

সম্ভবামি যুগে যুগে।

যুগে যুগেই তো জন্মাচ্চেন তাঁরা দেশে দেশে। আজও এই মুহূর্ত্তেই জন্মেচেন কালও জন্মাবেন। সেই জন্মের