পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৬
মানুষের ধর্ম্ম

তা এতে ব্যক্ত হয়েচে। তার ভাব অসংলগ্ন, ভাষা কাঁচা, যেন হাৎড়ে হাৎড়ে বলবার চেষ্টা। কিন্তু ‘চেষ্টা’ বললেও ঠিক হবে না, বস্তুত চেষ্টা নেই তাতে, অস্ফুটবাক মন বিনা চেষ্টায় যেমন ক’রে পারে ভাবকে ব্যক্ত করেচে, সাহিত্যের আদর্শ থেকে বিচার করলে স্থান পাওয়ার যোগ্য সে মোটেই নয়।

 যে কবিতাগুলো পড়ব তা একটু কুণ্ঠিতভাবেই শোনাবো, উৎসাহের সঙ্গে নয়। প্রথম দিনেই যা লিখেচি, সেই কবিতাটাই আগে পড়ি। অবশ্য ঠিক প্রথম দিনেরই লেখা কি-না, আমার পক্ষে জোর ক’রে বলা শক্ত। রচনার কাল সম্বন্ধে আমার উপর নির্ভর করা চলে না; আমার কাব্যের ঐতিহাসিক যাঁরা, তাঁরা সে কথা ভালো জানেন। হৃদয় যখন উদ্বেল হ’য়ে উঠেছিল আশ্চর্য্য ভাবোচ্ছ্বাসে, এ হচ্চে তখনকার লেখা। এ’কে এখনকার অভিজ্ঞতার সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হবে। আমি বলেচি আমাদের এক দিক ‘অহং’ আর একটা দিক ‘আত্মা’। ‘অহং’ যেন খণ্ডাকাশ, ঘরের মধ্যকার আকাশ, যা নিয়ে বিষয়কর্ম্ম মামলামকদ্দমা, এই সব। সেই আকাশের সঙ্গে যুক্ত মহাকাশ, তা নিয়ে বৈষয়িকতা নেই; সেই আকাশ অসীম, বিশ্বব্যাপী। বিশ্বব্যাপী আকাশে ও খণ্ডাকাশে যে-ভেদ, অহং আর আত্মার মধ্যেও সেই ভেদ। মানবত্ব বলতে যে-বিরাট