পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট
১১৭

আমার এই অনুভূতি কবিতাতে প্রকাশ পেয়েচে জীবনদেবতা শ্রেণীর কাব্যে।

“ওগো অন্তরতম
মিটেছে কি তব সকল তিয়াষ
আসি অন্তরে মম।”

 আমি যে-পরিমাণে পূর্ণ অর্থাৎ বিশ্বভূমীন, সেই পরিমাণে আপন করেচি তাঁকে, ঐক্য হয়েচে তাঁর সঙ্গে। সেই কথা মনে ক’রে বলেছিলুম, তুমি কি খুসি হয়েচ আমার মধ্যে তোমার লীলার প্রকাশ দেখে?

 বিশ্বদেবতা আছেন, তাঁর আসন লোকে লোকে, গ্রহচন্দ্রতারায়। জীবনদেবতা বিশেষভাবে জীবনের আসনে, হৃদয়ে হৃদয়ে তাঁর পীঠস্থান, সকল অনুভূতি সকল অভিজ্ঞতার কেন্দ্রে। বাউল তাঁকেই বলেচে মনের মানুষ। এই মনের মানুষ, এই সর্ব্বমানুষের জীবনদেবতার কথা বলবার চেষ্টা করেচি Religion of Man বক্তৃতাগুলিতে। সেগুলিকে দর্শনের কোঠায় ফেললে ভুল হবে। তাকে মতবাদের একটা আকার দিতে হয়েচে, কিন্তু বস্তুত সে কবিচিত্তের একটা অভিজ্ঞতা। এই আন্তরিক অভিজ্ঞতা অনেক কাল থেকে ভিতরে ভিতরে আমার মধ্যে প্রবাহিত—তাকে