পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
মানুষের ধর্ম্ম

তাদের জগতের আয়তন কেবল তলপৃষ্ঠ নিয়ে। তাদের সমস্ত দায় ঐ একতলাটাতেই। মানবজগতের আয়তনে বেধ আছে, যা চোখে পড়ে তার গভীরে। প্রত্যক্ষ তথ্যকে উপেক্ষা করলে মানুষের চলে না, আবার সত্যকেও নইলে নয়।

অন্যান্য জন্তুর মতোই তথ্য মানুষের সম্বল, কিন্তু সত্য তার ঐশ্বর্য্য। ঐশ্বর্য্যের চরম লক্ষ্য অভাব দূর করা নয়, মহিমা উপলব্ধি করানো। তাই ঐশ্বর্য্য-অভিমানী মানুষ বলেচে,

ভূমৈব সুখং নাল্পে সুখমস্তি।

বলেচে অল্পে সুখ নেই, বৃহতেই সুখ।

এটা নিতান্তই বেহিসাবী কথা হোলো। হিসাবীবুদ্ধিতে বলে যা চাই আর যা পাই এই দুটো মাপে মিলে গেলেই সুখের বিষয়। ইংরেজিতে একটা চলতি কথা আছে, যা যথেষ্ট সেটাই ভূরিভোজের সমান-দরের। শাস্ত্রেও বলচে,

সন্তোষং পরমাস্থায় সুখার্থী সংযতো ভবেৎ।

তবেই তো দেখচি সন্তোষে সুখ নেই আবার সন্তোষেই সুখ এই দুটো উল্‌টো কথা সামনে এসে দাঁড়ালো। তার কারণ, মানুষের সত্তায় দ্বৈধ আছে। তার যে-সত্তা জীবসীমার মধ্যে সেখানে যেটুকু আবশ্যক সেই