পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
মানুষের ধর্ম্ম

মানুষ একদিকে মৃত্যুর অধিকারে আর একদিকে অমৃতে;—একদিকে সে ব্যক্তিগত সীমায়, আর একদিকে বিশ্বগত বিরাটে। এই দুয়ের কোনোটাকেই উপেক্ষা করা চলে না। মানুষ নিজেকে জানে

তদ্দূরে তদ্বন্তিকে চ

—সে দূরেও বটে, সে নিকটেও। সেই দূরের মানুষের দাবী নিকটের মানুষের সব কিছুকেই ছাড়িয়ে যায়। এই অপ্রত্যক্ষের দিকে মানুষের কল্পনাবৃত্তি দৌত্য করে। ভুল করে বিস্তর, যেখানে থই পায় না সেখানে অদ্ভুত সৃষ্টি দিয়ে ফাঁক ভরায়, তবুও এই অপ্রতিহত প্রয়াস সত্যকেই প্রমাণ করে,—মানুষের এই একটি আশ্চর্য্য সংস্কারের সাক্ষ্য দেয়, যে, যেখানে আজো তার জানা পৌঁছয়নি সেখানেও শেষ হয়নি তার জানা।

গাছে গাছে ঘর্ষণে আগুন জ্বলে। জ্বলে বলেই জ্বলে এই জেনে চুপ করে থাকলে মানুষের বুদ্ধিকে দোষ দেওয়া যেত না। জানবার নেই বলেই জানা যাচ্চে না এ কথাটা সঙ্গত নয় তো কী। কিন্তু মানুষ ছেলেমানুষের মতো বারবার জিজ্ঞাসা করতে লাগল, ঘর্ষণে আগুন জ্বলে কেন? বুদ্ধির ব্যাগারখাটুনি সুরু হোলো। খুব সম্ভব গোড়ায় ছেলেমানুষের মতোই জবাব দিয়েছিল; হয়তো বলেছিল গাছের মধ্যে একটা রাগী ভূত অদৃশ্য-