পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
মানুষের ধর্ম্ম

বলবেন ওখানে প্রশ্নের শেষ হতে পারে না। তখন মানুষ বললে ধর্ম্মস্য তত্ত্বং নিহিতং গুহায়াম্‌ মানবধর্ম্মের গভীর সত্য নিহিত আছে গোপনে। আমার এই আমি আছে প্রত্যক্ষে, সেই আমি আছে অপ্রত্যক্ষে।

কথাটা স্পষ্ট করে বুঝে দেখবার চেষ্টা করা যাক।

এই যে জল, এই যে স্থল, এই যে এটা, এই যে ওটা, যত কিছু পদার্থকে নির্দ্দেশ করে বলি এই-যে, এ সমস্তই ভালো করে জেনে-বুঝে নিতে হবে নইলে ভালো করে বাঁচা যায় না। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই মানুষ বলে, তদ্বিদ্ধি নেদং যদিদম্‌ উপাসতে। তাকেই জানো। কাকে, না ইদং অর্থাৎ এই-যে ব'লে যাকে স্বীকার করি তাকে নয়। “এই যে আমি শুনচি,” এ হোলো সহজ কথা। তবুও মানুষ বললে এর শেষ কথা সেইখানে যেখানে ইদং সর্ব্বনাম পৌঁছয় না। ক্ষ্যাপার মতো সে জিজ্ঞাসা করে কোথায় আছে

শ্রোত্রস্য শ্রোত্রং

—শ্রবণেরও শ্রবণ। ভৌতিক প্রণালীতে খোঁজ করতে করতে এসে ঠেকে বাতাসের কম্পনে। কিন্তু ওখানেও রয়েচে ইদং, এই-যে কম্পন। কম্পন তো শোনা নয়। যে বলচে, আমি শুনচি, তার কাছে পৌঁছনো গেল। তারো সত্য কোথায়।