পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মানুষের ধর্ম্ম
৪৩

তাঁর মধ্যেই, এর শাশ্বত আনন্দের ধন যা-কিছু সে তাঁতেই।

এই তিনি, বস্তু-অবচ্ছিন্ন একটা তত্ত্বমাত্র নন। যাকে বলি আমার আমি সে যেমন অন্তরতমভাবে আমার একান্ত বোধ-বিষয় তিনিও তেমনি। যখন তাঁর প্রতি ভক্তি জেগে ওঠে, যখন তাঁতে আনন্দ পাই তখন আমার এই আমি-বোধই বৃহৎ হয় গভীর হয় প্রসারিত হয় আপন সীমাতীত সত্যে। তখন অনুভব করি, এক বৃহৎ আনন্দের অন্তর্গত আমার আনন্দ। অন্য কোনো গ্রন্থে এ-সম্বন্ধে যে-উপমা ব্যবহার করেচি এখানে তার পুনরাবৃত্তি করতে চাই।

একখণ্ড লোহার রহস্যভেদ ক'রে বৈজ্ঞানিক বলেচেন সেই টুক্‌রোটি আর কিছুই নয়, কতকগুলি বিশেষছন্দের বিদ্যুৎমণ্ডলীর চিরচঞ্চলতা। সেই মণ্ডলীর তড়িৎকণাগুলি নিজেদের আয়তনের অনুপাতে পরস্পরের থেকে বহু দূরে দূরে অবস্থিত। বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে যা ধরা পড়েচে সহজ দৃষ্টিতে যদি সেই রকম দেখা যেত তাহলে মানবমণ্ডলীতে প্রত্যেক ব্যক্তিকে যেমন পৃথক দেখি তেমনি তাদেরও দেখতুম। এই অণুগুলি যত পৃথকই হোক এদের মধ্যে একটা শক্তি কাজ করচে। তাকে শক্তিই বলা যাক। সে সম্বন্ধ-শক্তি, ঐক্য-শক্তি, সে ঐ লৌহখণ্ডের সংঘ-শক্তি। আমরা যখন লোহা দেখচি