পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪
মানুষের ধর্ম্ম

নানা পর্য্যায়ের জন্মমূঢ়তা আছে ব’লেই যেমন জ্ঞানের বিশ্বভূমীন সম্পূর্ণতায় অশ্রদ্ধা করা যায় না সৌন্দর্য্যের আদর্শসম্বন্ধেও তেমনি।

 বার্ট্রাণ্ড্‌ রাসেল কোনো এক গ্রন্থের ভূমিকায় লিখেচেন যে, বেটোভনের সিম্ফনিকে বিশ্বমনের রচনা বলা যায় না, সেটা ব্যক্তিগত। অর্থাৎ সেটা তো গাণিতিক তত্ত্বের মতো নয়, যার উদ্ভাবনাসম্বন্ধে ব্যক্তিগত মন উপলক্ষ্য মাত্র, যা নিখিল মনের সামগ্রী। কিন্তু যদি এ কথা স্বীকার করতে হয় যে বেটোভনের রচনা সকলেরই ভালো লাগা উচিত, অর্থাৎ ঠিকমতো শিক্ষা পেলে, স্বাভাবিক চিত্তজড়তা না থাকলে, অজ্ঞান অনভ্যাসের আবরণ দূর হোলে সকল মানুষের তা ভালো লাগবে, তাহলে বলতেই হবে শ্রেষ্ঠগীত রচয়িতার শ্রেষ্ঠত্ব সকল মানুষের মনেই সম্পূর্ণ আছে, শ্রোতৃরূপে ব্যক্তিবিশেষের মনে তা বাধাগ্রস্ত।

 বুদ্ধি জিনিষটা অস্তিত্বরক্ষার পক্ষে অপরিহার্য্য কিন্তু সৌন্দর্য্যবোধের অপূর্ণতাসত্ত্বেও সংসারে সিদ্ধিলাভের দৃষ্টান্ত অনেক আছে। সৌন্দর্য্যবোধের কোনো সাংঘাতিক তাগিদ নেই। এ-সম্বন্ধে যথেচ্ছাচারের কোনো দণ্ডনীয় বাধা নেই। যুক্তি-স্বীকারকারী বুদ্ধি মানুষের মনে যত সুনিশ্চিত হয়েচে প্রাণের বিভাগে শাসনের অভাবে সৌন্দর্য্যস্বীকারকারী রুচি তেমন পাকা