পাতা:মানুষের ধর্ম্ম - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬০
মানুষের ধর্ম্ম

স্পর্দ্ধা নিয়ে মানুষ অগ্রসর। একেবারে নতুন কিছু উদ্ভাবন করবে তা নয়, নিজের দেহশক্তির সঙ্গে বিরাট ভৌতিক শক্তির সংযোগকে উত্তরতর ক’রে তুলবে।

 মনে করা যাক সবই হোলো, ভৌতিক শক্তির পূর্ণতাই ঘটল। তবু কি মানুষ বলতে ছাড়বে ততঃ কিম্‌। রামায়ণে বর্ণিত দশাননের শরীরে মানবের স্বভাবসিদ্ধ দেহশক্তি বহুগুণিত হয়েছিল, দশদিক থেকে আহরিত ঐশ্বর্য্যে পূর্ণ হয়েছিল স্বর্ণলঙ্কাপুরী। কিন্তু মহাকাব্যে শেষ জায়গাটা সে পেল না। তার পরাভব হোলো রামচন্দ্রের কাছে। অর্থাৎ বাহিরে যে দরিদ্র, আত্মায় যে ঐশ্বর্য্যবান, তার কাছে। সংসারে এই পরাভব আমরা যে সর্ব্বদা প্রত্যক্ষ ক’রে থাকি তা নয়, অনেক সময়ে তার বিপরীত দেখি, তবু আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে মানুষ এ’কে পরাভব বলে। মানুষের আর একটা গূঢ় জগৎ আছে সেইখানেই এই পরাভবের অর্থ পাওয়া যায়। সেই হোলো তার আত্মার জগৎ।

 আপন সত্তার পরিচয়ে মানুষের ভাষায় দুটি নাম আছে। একটি অহং, আর-একটি আত্মা। প্রদীপের সঙ্গে একটিকে তুলনা করা যায় আর-একটিকে শিখার সঙ্গে। প্রদীপ আপনার তেল সংগ্রহ করে। আপনার উপাদান নিয়ে প্রদীপের বাজারদর, কোনোটার দর