পাতা:মায়াবাঁশী - রবীন্দ্রনাথ মিত্র.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মায়াবাঁশী
১০

দাঁড়িয়ে বললে, “মহারাজ, আজকের কাজ তো শেষ হ’ল। কাল কি করতে হবে ফরমায়েস করুন।”

 রাজা আগেই মন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ ক’রে কাজ ঠিক ক’রে রেখেছিলেন। মন্ত্রী রাজার আদেশ জানালেন।

 “রাজার গোলায় এক গোলা ধান আর চাল মেশান আছে। বেশী নয়—হাজার মণ ধান আর হাজার মণ চাল। কাল রাতের মধ্যে ধান আর চাল পৃথক করতে হবে। পারবে?”

 রাখালের মুখ শুকিয়ে গেল। সে ভেবেছিল, খরগোষ চরাবার মতই কোন ফরমাস হবে; কিন্তু এযে দেখছি সাংঘাতিক রকমের হুকুম! এক রাতে হাজার মণ চাল আর ধান আলাদা করতে হবে।

 মন্ত্রী রাখালের মুখ দেখে মনের অবস্থা বুঝতে পারলেন, বললেন, “পারবে হে? ভেবে-চিন্তে জবাব দিও। একটা দানা চাল আর ধানেও যদি মিশে থাকে তাহ’লে প্রাণ যাবে।” রাখাল সাহসে বুক বেঁধে বললে, “কি ভয় দেখাচ্ছেন, মন্ত্রীমশায়? পরশু সকাল কেন দুপুর রাতেই দেখবেন, মহারাজের হুকুম অক্ষরে অক্ষরে তামিল ক’রেছি।”

 পরদিন রাতে ধানের গোলায় এসেই রাখালের ভয় হ’ল। প্রকাণ্ড গোলা—ধানে আর চালে বোঝাই। একবার মনে হ’ল, দরকার কি রাজকন্যা আর রাজত্ব? পালাই!