পাতা:মায়াবী - পাঁচকড়ি দে.pdf/১৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম পরিচ্ছেদ । গঙ্গাবক্ষে । সম্মুখে গঙ্গা–বর্ষাকালে কুলে কুলে পূর্ণ হইয়া অগাধ জলরাশি উচ্ছসিত হইয়া উঠিতেছে। ফুলসাহেব জুমেলিয়ার্কে লইয়া গঙ্গাতটে আসিয়া দাড়াইল। ঝড়বৃষ্টিতে জলস্রোত; দ্বিগুণবেগে—প্রচণ্ডরূপে তরঙ্গায়িত হইয়া শৃঙ্খলিছিন্ন উন্মত্তের ন্যায় উধাও হইয়া ছুটতেছে । সশব্দে সবেগ তরঙ্গ তটে ঘন ঘন প্ৰহত হইতেছে । গাঢ় কৃষ্ণ মেঘের ছায়ায়—ঘনীভূত অন্ধকারের ছায়ায়-বিমল শুভ্ৰ গঙ্গাবক্ষ মসীমায় হইয়া উঠিয়াছে। সেই মসীমিয় অন্ধকারমাত্ৰাত্মক গঙ্গাবক্ষে ‘সহস্ৰ বিভীষিকা একসঙ্গে নাচিয়া বেড়াইতেছে-এখানে অশ্রান্ত জল গজ্জিতেছে—সেই সঙ্গে উন্মত্ত বায়ু গৰ্জ্জিতেছে—সেই সঙ্গে অনাবরতিবর্ষণশীল মেঘ গৰ্জিতেছে ; তিন গৰ্জনে মিলিয়া ধবণীর বিপুল শূন্যতা পূর্ণ করিয়া দিতেছে। V ফুলসাহেব ও জুমেলিয়া সেই-তৃণাটি-পাঁড়িলে-খণ্ড-বিখণ্ড-স্রোতে ঝাঁপ দিয়া পড়িল। উভয়েই সন্তরণপটু ; তরঙ্গ ভাঙ্গিয়া, স্রোত কাটিয়া, উভয়ে সস্তরণ করিয়া অপর তটাভিমুখে অগ্রসর হইয়া চলিল। স্রোতের বেগ তাহাদিগকে তাহাদিগের পথ হইতে নিজের পথে অনেকটা করিয়া টানিয়া লইত্তেছিল। মাঝখানে গিয়া জুমেলিয়ার শরীর অরসন্ন হইয়া আসিল-সে আর সাতার দিতে পারে না । তরঙ্গের পর তরঙ্গ আসিয়া তাহার মুখের উপর পাডিয়া তাহাকে একান্ত কাতর করিয়া তুলিল । স্রোতের মুখে গুড়িয়া ফুলসাহেবের নিকট হইতে অনেক দূরে গিয়া