পাতা:মায়া-মৃগ - কাশীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
মায়া-মৃগ।

 লক্ষণ। আর্য্য! দেখুন, ব্যাধ-বাণ-বিদ্ধ কুরঙ্গীর করুণ আর্ত্তস্বরে কি সদয়-হৃদয় তাপসের মন কখনো অক্ষুব্ধ থাকে? দেবীর মুখে এরূপ সকরুণ বাক্য শ্রবণ ক’লে সহজেই মনে দুঃখোদয় হয়। আরো দেখুন্‌ কল্লোলিনী যখন সহসা উন্মুক্ত পথ হ’য়ে শৈল শিখর হ’তে কল কাল শব্দে নিম্নে প্রধাবিত হয়, তখন কে তা’র গতি রোধ ক’র্ত্ত্যে পারে? আর্য্যা, দারুণ মন কষ্ট পেয়েই ঈদৃশ উক্তি ক’চ্ছেন।

 রাম। ভ্রাতঃ! তা' আিম বিলক্ষণ অবগত আছি। পতিপ্রাণা জানকী, আমার এই দুরদৃষ্টে নিদারুণ মর্ম্ম বেদনা পেয়েছেন। আহা! কোথায় পাটেশ্বরী হ’য়ে সিংহাসন সমুজ্জ্বল ক’র্ব্বেন, না, এখন স্বামীর সঙ্গে বনবিহারিণী হ’য়েছেন! দুগ্ধফেনা-নিভা কোমল কুসুম-শয্যায় শয়নে ও যাঁর কষ্ট বোধ হ’ত, এখন তিনি কঠিন মৃত্তিকা-পৃষ্ঠে অকাতরে পর্ণ-শয্যায় সুষুপ্তি লাভ ক’চ্ছেন। —হায়! আমি কি মন্দভাগা। প্রাণাধিকা প্রণয়িনীর ঈদৃশ বিসদৃশ দশাও আমাকে দর্শন ক’র্ত্যে হ’ল!!আহা। প্রেয়সী সকল সুখে জলাঞ্জলি দিয়েও আমার অনুবর্ত্তিনী হ’য়েছেন।